পিএফআই সমর্থকদের বিক্ষোভ।
সন্ত্রাসে আর্থিক মদত, দেশবিরোধী কার্যকলাপ চালানোর অভিযোগে মুসলিম সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া (পিএফআই)-র বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে বড় মাপের অভিযানে নেমেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই অভিযানের বিরুদ্ধে পিএফআইয়ের ডাকা হরতাল ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কেরল। জোর করে দোকানপাট বন্ধ করার অভিযোগে পিএফআই ধর্মঘটীদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করল কেরল হাই কোর্ট। পিএফআই সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার পথে হাঁটছে কর্নাটক সরকারও।
বুধবার মধ্যরাত থেকে দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে তল্লাশি অভিযান। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৫টি রাজ্যের ৯৩টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। শুক্রবারও তা জারি রয়েছে। তার বিরুদ্ধে সকাল থেকেই কেরলের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখান পিএফআই নেতা-কর্মীরা। ওয়েনাড জেলায় সরকারি বাসে পাথর ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। কোট্টায়াম জেলায় রাস্তা অবরোধ, দোকানের অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পরে অবশ্য লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। পিএফআই নেতাদের গ্রেফতারির বিরুদ্ধে কন্নুরের একটি প্রতিবাদ-কর্মসূচি থেকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের দফতরে পেট্রল বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে। জোর করে দোকান বন্ধ করতে গেলে স্থানীয়দের হাতে এক পিএফআই বিক্ষোভকারীকে মারধর করার ঘটনাও ঘটেছে। কোচিতেও জোরজবরদস্তি দোকান, বাজার বন্ধ করার অভিযোগ উঠেছে বিভোক্ষকারীদের বিরুদ্ধে।
এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নজরে রেখে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে কেরল হাই কোর্ট। গত জানুয়ারি মাসে উচ্চ আদালত বলেছিল, হরতালের ডাক দিতে হলে সাত দিন আগে থেকে জানাতে হবে। জোর করে দোকানপাট বন্ধ করে বিক্ষোভ করা যাবে না। সেই রায় উপেক্ষিত হওয়ায় রাজ্য সরকারকে পিএফআইয়ের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশও দিয়েছে রাজ্য সরকার।
পিএফআই নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভের জেরে গন্ডগোল হয়েছে পুণে ও বেঙ্গালুরুতেও। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভের জেরে পুণেতে অন্তত ৪০ জন পিএফআই সমর্থককে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার দেশদ্রোহের মামলা দায়ের করে ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে কর্নাটকে। ওই রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগা জ্ঞানেন্দ্র জানান, পিএফআই নিষিদ্ধ করা হবে রাজ্যে। সেই প্রক্রিয়াও ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।
বেশ কয়েক বছর ধরেই নানা হিংসাত্মক কার্যকলাপের পিছনে পিএফআই যোগ থাকার অভিযোগ উঠেছে। সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার দাবিও উঠেছে বহু বার। যদিও সেই পথে হাঁটেনি কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, তারা সব দিক দেখেই এ ক্ষেত্রে এগোতে চাইছে। তবে পিএফআই সমর্থকদের ধরপাকড়ের পিছনে ভোটের অঙ্ক থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না রাজনৈতিক মহল।