প্রশান্ত কিশোরের বাড়ির দেওয়াল ভাঙা চলছে।
ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের পৈতৃক বাড়িতে বুলডোজার চলল। বিহারের বক্সার জেলার অহিরৌলিতে ৮৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন এলাকায় ওই বাড়িটি ছিল। স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশে সেটির একাংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে এর সঙ্গে নীতীশ কুমারের সরকারের সঙ্গে প্রশান্তের বর্তমান রাজনৈতিক সমীকরণের কোনও যোগ নেই বলে দাবি স্থানীয় প্রশাসনের। তাদের দাবি, জাতীয় সড়ক চওড়া করতে জমি অধিগৃহীত জমি খালি করা হচ্ছে। প্রশান্তের বাড়ির কিছুটা অংশও তার মধ্যে পড়ছিল। তাই অধিগৃহীত অংশটুকুই ভেঙে ফেলা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে প্রশান্তের বাড়ির সামনে বুলডোজার এবং স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকদের দেখে এলাকায় ভিড় জমে যায়। তার প্রায় ১০ মিনিটের মধ্যেই বাড়ির পাঁচিল এবং মূল ফটকটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ প্রশাসনের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেননি। তবে গোটা ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী নীতীশের সঙ্গে প্রশান্তের বর্তমান সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা শুরু হতে সময় লাগেনি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তরফে এ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে যদিও তাঁরা অভিযোগ খারিজ করে দেন।
তবে তাতেও জল্পনা বন্ধ হয়নি। কারণ ৮৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন যে বাড়িটি ভেঙে ফেলা হয়েছে, সেটি প্রশান্তর পৈতৃক ভিটে। তাঁর বাবা শ্রীকান্ত পাণ্ড্য তৈরি করেছিলেন। এত দিন পরে হঠাৎ সেই জমির একাংশ কী ভাবে অধিগৃহীত জমিতে পরিণত হল, তার সদুত্তর যদিও মেলেনি। শুক্রবার রাত পর্যন্ত তা নিয়ে মুখ খোলেননি প্রশান্ত নিজেও।
আদতে বক্সারেরই বাসিন্দা প্রশান্ত। তাঁর বুদ্ধির উপর ভরসা করে একাধিক রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেছেন বহু রাজনীতিক। ২০১৫ সালে লালুর রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) এবং কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে নীতীশকে ক্ষমতায় বসানোর পিছনেও বড় ভূমিকা ছিল তাঁর। কিন্তু নীতীশ বিজেপি-র হাত ধরার পর দু’জনের সম্পর্কে অবনতি ঘটে। জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি), সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-সহ মোদী সরকারের একাধিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সরব হন তিনি। তার জেরে দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করেন নীতীশ।
ঘটনাচক্রে, এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসবা নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে রণকৌশল তৈরি করতে ব্য়স্ত প্রশান্ত। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে উৎখাত করতে রীতিমতো কোমর বেঁধে নামছে বিজেপি। তাই বিহারে নীতীশ ও বিজেপির জোট সরকার ঘুরিয়ে তাঁকে বার্তা দিতে চাইছে বলেও জল্পনা মাথাচাড়া দিচ্ছে।