ফাইল চিত্র।
আজ, সোমবার আফতাব আমিন পুণাওয়ালার নার্কো অ্যানালিসিস হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শ্রদ্ধা ওয়ালকর খুনে অভিযুক্ত তাঁর একত্রবাসের সঙ্গী ওই যুবকের সেই পরীক্ষা শেষ পর্যন্ত হয়নি। মনে করা হচ্ছে, সব পদ্ধতি মানতে দিন দশেক সময় লাগবে। ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (এফএসএল) কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই পরীক্ষার আগে আফতাবের অনুমতি সাপেক্ষে তার পলিগ্রাফ টেস্ট করাতে হবে। রবিবার পুলিশের সঙ্গে এফএসএলের কর্তাদের বৈঠকে পুরো প্রক্রিয়া নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়েছে।
আফতাবের এই দফার পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে কাল, মঙ্গলবার। গত ১৭ নভেম্বর দিল্লির আদালত পাঁচ দিনের মধ্যে আফতাবের নার্কো অ্যানালিসিস করাতে বলেছিল পুলিশকে। সেই জন্য তাড়া ছিল। কিন্তু শীর্ষ আদালতের নির্দেশ রয়েছে, কারও অনুমতি না নিয়ে তার নার্কো অ্যানালিসিস, ব্রেন ম্যাপিং বা পলিগ্রাফ টেস্ট করা যাবে না। ওই পরীক্ষার সময় দেওয়া বিবৃতি প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণ হিসাবে আদালতে দাখিল করা যাবে না, যদি-না বেঞ্চ মামলার প্রকৃতি অনুযায়ী তা অনুমোদন করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে, ঠান্ডা মাথায় খুন করে দেহ লোপাট করেছে আফতাব। জেরার সহজে ভাঙছে না। সেই জন্য নার্কো অ্যানালিসিস জরুরি বলে মনে করা হচ্ছে।
এফএসএল-এর ক্রাইম সিন ইনচার্জ রজনীশ গুপ্ত জানিয়েছেন, নার্কো অ্যানালিসিস একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। অপারেশন থিয়েটারে চিকিৎসকদের নিয়ে করা হয়। যাঁকে জেরা করা হবে, ইঞ্জেকশনে ওষুধ শিরায় পাঠিয়ে সংজ্ঞাহীনতার নানা স্তরের মধ্য দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। যার ফলে প্রশ্নের উত্তরে বানিয়ে কিছু বলার ক্ষমতা প্রায় থাকে না। জানা যাচ্ছে, এফএসএল-এর ডিরেক্টর দীপা বর্মা আফতাবের পরীক্ষার বিষয়টিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। রোহিনীর বাবাসাহেব অম্বেডকর হাসপাতালে পরীক্ষাটি হবে। আপাতত দিন স্থির করার জন্য বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে সমন্বয়ের কাজ চলছে।
নাপ্রো অ্যানালিসিস হওয়ার দিনেও চর্চায় ছিল কুরিয়র প্রসঙ্গ। আফতাবের কুড়ি হাজার টাকার একটি কুরিয়র বিল নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, দিল্লির ছতরপুরে চলে আসার আগে ওই কুরিয়রে মহারাষ্ট্রের পালঘরের বাড়ি থেকে আসবাব আর গেরস্থালির অন্য জিনিসপত্র পাঠিয়েছিল সে। মোট ৩৭টি বাক্স হয়েছিল। তবে কে কুরিয়র খরচ দেবে, তা নিয়ে শ্রদ্ধার সঙ্গে আফতাবের ঝগড়া হয়। কার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গিয়েছে, আপাতত সেটাই খতিয়ে দেখছে পুলিশ। রবিবার পালঘরে ওই কুরিয়র কোম্পানির এক কর্মীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। ওই দিন মুম্বইয়ের কাছে মীরা রোডের একটি বাড়ি মালিকেরও বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। বাড়িটিতে দিন পনেরো আগেও আফতাবের পরিবারের লোকজন থাকতেন। এখন তাঁরা ফেরার।
আফতাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত মে মাসে শ্রদ্ধাকে খুন করার। তদন্তে জানা গিয়েছে, তার পরে একটি তিনশো লিটারের ফ্রিজ কেনে সে। শ্রদ্ধার দেহ ৩৫ টুকরো করে প্রায় তিন সপ্তাহ রেখে দেয়। একটু একটু করে মেহরৌলির জঙ্গলে সেই দেহাংশ ফেলে আসে। ইতিমধ্যেই কিছু হাড়গোড় উদ্ধার হয়েছে। তা শ্রদ্ধার কি-না, জানার জন্য ডিএনএ পরীক্ষা হবে। উদ্ধার হয়েছে একটি চোয়ালের হাড়। শ্রদ্ধা মুম্বইয়ের এক দন্ত্যচিকিৎসকের কাছে যেতেন। সেই সূত্র ধরে দাঁতের পুরনো এক্স-রে চিত্র বার করে দু’টি মিলিয়ে দেখার চেষ্টা চলছে।