কাঁধে বাঁক নিয়ে ভক্তেরা মহাদেবের মাথায় জল ঢালতে যাচ্ছেন। —ফাইল চিত্র।
শিবভক্তদের উপর পুষ্পবৃষ্টির পর এ বার কাঁওয়ার যাত্রাকে কেন্দ্র করে ২৫০টি পরিবারকে ‘লাল কার্ড’ দেখিয়ে ফের বিতর্কে জড়াল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। লাল কার্ড দেখানো পরিবারের মধ্যে ৭০টি মুসলিম পরিবার নিরাপত্তার অভাবে গ্রাম ছেড়েছে বলে খবর।
উত্তরপ্রদেশের খইলাম গ্রামের ভিতর দিয়ে কাঁওয়ার যাত্রা, অর্থাৎ কাঁধে বাঁক নিয়ে ভক্তেরা মহাদেবের মাথায় জল ঢালতে যান। এই গ্রাম মুসলিম প্রধান। গত বছর গ্রামের ভিতর দিয়ে যাওয়ার সময় কাঁওয়ার যাত্রীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। ঘটনায় জখম হয়েছিলেন অনেকে। এর পর হামলায় অভিযুক্ত হিসাবে পুলিশ ২৫০ পরিবারের প্রতিটি থেকে অন্তত এক জন করে আটক করে। যাঁদের বেশিরভাগই ছিলেন মুসলিম।
পুলিশ জানিয়েছে, চলতি বছরে কোনওরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ওই ২৫০ পরিবারকে আগাম সতর্ক করা হয়েছে। তাই তাঁদের ‘লাল কার্ড’ দেওয়া হয়েছে। ‘প্রতীকী’ ৫ লক্ষ টাকার বন্ডে এই লাল কার্ড দেওয়া হয়েছে। তাঁরা যে পুলিশের নজরে রয়েছে তা বোঝানোর জন্যই লাল কার্ড, জানিয়েছেন সিনিয়র এসপি মুনিরাজ জি।
আরও পড়ুন: মুম্বইয়ে দাউদের ভগ্নপ্রায় বাড়ির দাম উঠল সাড়ে তিন কোটি!
তবে গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, যাঁদের পুলিশ ‘লাল কার্ড’ দিয়েছে, তাঁরা কেউই গত বছর সংঘর্ষের সঙ্গে যুক্ত নন। এমনকি, তাঁদের অনেকেই সে সময় গ্রামে ছিলেন না। অহেতুকই তাঁদের আটক করেছিল পুলিশ। আর এবারে তাঁদের আগাম ‘লাল কার্ড’ দিয়েছে। তাই ভয় পেয়ে, নিরাপত্তার অভাবে ৭০ মুসলিম পরিবার গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছে বলে দাবি তাঁদের।
পুলিশ কমিশনার (গুন্ডাদমন শাখা) আরকে ভাটিয়া বলেছেন, ‘‘লাল কার্ড আইনসম্মত নয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। প্রতিটি গ্রামবাসীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও অনেকগুলো পরিবার গ্রাম ছেড়েছে। সেটা সত্যিই চিন্তার ব্যাপার। কাঁওয়ার যাত্রা মিটে গিয়েছে। আশা করছি তাঁরা ফিরে আসবেন।’’
এর আগেও উত্তরপ্রদেশেই কাঁওয়ার যাত্রী নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশের মেরঠে শিবভক্তদের উপরে হেলিকপ্টার থেকে গোলাপের পাপড়ি বর্ষণ করেন শীর্ষ পুলিশকর্তারা। শিবভক্তরাও বিতর্কে জড়িয়েছেন। বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেন তাঁরা। তার আগের দিন রাজধানী দিল্লিতেও সাধারণ মানুষের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছেন তাঁরা।