হাসপাতালে ঢুকে কাঁদানে গ্যাস পুলিশের

গত কাল হাইল্যান্ড হাসপাতালে ঢুকে হামলা চালানোরও অভিযোগ উঠেছে মেঙ্গালুরু পুলিশের বিরুদ্ধে। কাল বিকেল পাঁচটা নাগাদ গুলিবিদ্ধ জলিল এবং নৌশিনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:১৯
Share:

বেঙ্গালুরুতে প্রতিবাদ। ছবি: পিটিআই।

জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকে দিল্লি পুলিশের তাণ্ডবের পর এ বার বিতর্কে মেঙ্গালুরু পুলিশের ভূমিকা।

Advertisement

গত কালই পুলিশের গুলিতে প্রাণ গিয়েছে জলিল কুদরোলি এবং নৌশিন বেঙ্গরে নামে দুই বিক্ষোভকারীর। কিন্তু মহিলা কংগ্রেস জাতীয় সোশ্যাল মিডিয়ার কো-অর্ডিনেটর লাবণ্য বল্লালের পোস্ট করা একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, গুলি চালানোর পরে মেঙ্গালুরুর এক পুলিশকর্মী তাঁর সহকর্মীকে ক্রুদ্ধ স্বরে প্রশ্ন করছেন, ‘‘একটিও বুলেট কারও গায়ে লাগল না কেন, কেউ মারা গেল না কেন?’’ লাবণ্য ভিডিয়োটি টুইটারে শেয়ার করে কর্নাটকের স্বরাষ্ট্র দফতরকে ট্যাগ করে লিখেছেন, ‘‘শুনুন, পুলিশ কী বলছে।’’ ভিডিয়োটির সত্যতা অবশ্য যাচাই করা হয়নি।

গত কাল হাইল্যান্ড হাসপাতালে ঢুকে হামলা চালানোরও অভিযোগ উঠেছে মেঙ্গালুরু পুলিশের বিরুদ্ধে। কাল বিকেল পাঁচটা নাগাদ গুলিবিদ্ধ জলিল এবং নৌশিনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। সিনিয়র চিকিৎসকেরা এসে পরীক্ষা করে জানান, জলিল এবং নৌশিনের মৃত্যু হয়েছে। দুই বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতাল চত্বরে ভিড় জমাতে শুরু করেন প্রতিবাদীরা। পুলিশ হাসপাতালে পৌঁছলে সংঘর্ষ শুরু হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সেই সময়ে হাসপাতালের কয়েক জন কর্মী এমনকি রোগীরাও বাইরে বেরিয়ে আসেন। অভিযোগ, এর পরেই পুলিশ লাঠি চালাতে শুরু করে। হাসপাতালে ঢুকে তারা চলে যায় আইসিইউয়ের সামনে লবিতে। সেখানে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। আতঙ্কিত লোকজন আইসিইউ-য়ে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। পুলিশ লাঠি চালিয়ে, লাথি মেরে সেই দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। বেশ কয়েক জন আর একটি ওয়ার্ডে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। সেই দরজাও ভাঙার চেষ্টা করে পুলিশ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে পুলিশি তাণ্ডবের এই দৃশ্য হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে ধরা রয়েছে। যদিও মেঙ্গালুরু পুলিশ কমিশনারের অফিস থেকে দাবি করা হয়েছে, এটি ছোট ঘটনা।

Advertisement

গত কাল মেঙ্গালুরুর ঘটনা ‘কভার’ করতে যাওয়া সাংবাদিকদেরও নিগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। সাংবাদিকদের জনে জনে পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়া হয়। তা দেখানোর পরেও পুলিশ চিৎকার করে বলতে থাকে, ‘‘এটা সরকারি পরিচয়পত্র নয়...বেরিয়ে যান।’’ গত কাল আট মালয়ালি সংবাদকর্মীকেও হেফাজতে নিয়েছিল পুলিশ। সাত ঘণ্টা আটক রাখার পরে আজ সকালে কর্নাটক-কেরল সীমানায় তাঁদের কেরল পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ওই সংবাদকর্মীদের অভিযোগ, কর্নাটকের পুলিশ এমন আচরণ করছিল, যাতে মনে হচ্ছিল তাঁরা দাগী অপরাধী। বিষয়টিকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ আখ্যা দিয়ে এ দিন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পাকে চিঠি দিয়েছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।

এ দিনও পরিচয়পত্র ছাড়া কেরল থেকে মেঙ্গালুরু যাওয়ার জন্য এক মহিলা-সহ ৫০ জনকে আটক করেছে কর্নাটক পুলিশ। হিংসা প্রতিরোধে বৃহস্পতিবারই এই শহরে ঢোকার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নয়া নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে এ দিন কেরলে জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র, সাংবাদিকরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement