কীটনাশক দিয়েও পিঁপড়ে আটকানো যাচ্ছে না বলে দাবি গ্রামবাসীদের। প্রতীকী ছবি।
কোটি কোটি বিষাক্ত পিঁপড়ে ঘিরে ফেলেছে গোটা গ্রাম। পিঁপড়ের হামলায় আতঙ্কে ঘর ছাড়ছেন গ্রামবাসীরা। হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না গবাদি পশুরাও।
যে দিকে চোখ যায়, শুধু লাল আর লাল। রাস্তাঘাট, মাঠ, ঘরবাড়ি, গাছ— সর্বত্র পিঁপড়ে। আর এদের সংখ্যা যত বাড়ছে, ততই কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন গ্রামবাসীরা। পিঁপড়ের কামড়ে গা ফুলে চাকা চাকা দাগ হয়ে যাচ্ছে। শরীরে জ্বলন হচ্ছে। পিঁপড়ের হামলা থেকে বাঁচতে কীটনাশক পাউডার ছড়িয়েও কিছু হচ্ছে না বলে দাবি গ্রামবাসীদের। তাই বাধ্য হয়েই ঘর ছাড়তে হচ্ছে তাঁদের।
ঘটনাটি ওড়িশার পুরীর পিপিলি ব্লকের চন্দ্রদেইপুর পঞ্চায়েতের। এই পঞ্চায়েতের ব্রাহ্মণশাহি গ্রাম ‘রেড এবং ফায়ার অ্যান্ট’-এর জ্বালায় অতিষ্ঠ। এই গ্রামে ১০০ পরিবারের বাস। গ্রামটি নদী এবং জঙ্গলে ঘেরা। নদীর ধারে এবং জঙ্গলে এই বিষাক্ত পিঁপড়েদের বাস। প্রবল বৃষ্টি কারণে পিঁপড়েদের বাসায় জল ঢুকে যাওয়ায় কোটি কোটি পিঁপড়ে গ্রামের দিকে উঠে এসেছে।
কয়েকটি পরিবার ইতিমধ্যেই গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে এক গ্রামবাসী লোকনাথ দাস জানিয়েছেন, এ রকম পরিস্থিতি আগে কোনও দিন দেখেননি তাঁরা। আগেও বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, কিন্তু ঝাঁকে ঝাঁকে পিঁপড়ের হামলার মুখে পড়তে হয়নি। তাঁর কথায়, “বিষাক্ত পিঁপড়ের জ্বালায় জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ঠিক মতো খেতে, ঘুমোতে এমনকি রাস্তাতেও বেরোতে পারছি না।”
পিঁপড়ের হামলায় গ্রাম ছাড়ার খবর চাউর হতেই সেখানে পৌঁছয় ওড়িশার কৃষি এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিশেষজ্ঞ দল। ওই দলের বিজ্ঞানী সঞ্জয় মোহান্তি বলেন, “পিঁপড়েদের বাসস্থান জলে ডুবে যাওয়ায় সেগুলি গ্রামের দিকে উঠে আসছে। তবে ঠিক কোথা থেকে পিঁপড়েগুলি আসছে, তা খতিয়ে দেখছি আমরা।”
মোহান্তি আরও বলেন, “আমাদের এখন একটাই লক্ষ্য রানি পিঁপড়েদের খুঁজে বার করা। তাঁদের খুঁজে মেরে ফেললেই এই ঝঞ্ঝাট থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।” তাই এখন রানি পিঁপড়েদের খুঁজে বার করে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে ওই বিশেষজ্ঞ দল।