ফাইল চিত্র
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে শামিল স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য বিমা প্রকল্প ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ প্যাকেজ’ (পিএমজিকেপি)-এর মেয়াদ আরও ১৮০ দিন বাড়াল কেন্দ্রীয় সরকার। বর্ধিত সময়সীমা শুরু হচ্ছে ১৯ এপ্রিল থেকে।
আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এই বিষয়ে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। পিএমজিকেপি শুরু হয়েছিল ২০২০ সালের ৩০ মার্চ। ২২.১২ লক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীকে এর আওতায় আনা হয়। এখনও পর্যন্ত ১৯০৫ জন এই বিমা প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন।
গত কাল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছিল, দৈনিক সংক্রমণ একলপ্তে বেড়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ। এর পরেই উদ্বেগের ভাঁজ চওড়া হয়েছিল প্রশাসন থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তবে আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, সংক্রমণ গত কালের তুলনায় ৪৩ শতাংশ কমেছে। দৈনিক সংক্রমণ হারও আজ কমে হয়েছে ০.৩১ শতাংশ।
কেন্দ্র অবশ্য জানিয়েছিল, কেরল একসঙ্গে পাঁচ দিনের তথ্য প্রকাশের জেরেই করোনা সংক্রমণ, মৃত্যু এবং সংক্রমণ হার অনেকটা বেড়েছিল। তার পরেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল কেরলের স্বাস্থ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, প্রতিদিন যাতে করোনা তথ্য প্রকাশ করা হয়।
কেন্দ্রের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে কেরল সরকার। পিনারাই বিজয়ন সরকার কেন্দ্রের এই অভিযোগকে লজ্জাজনক বলে উল্লেখ করেছে। কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ দাবি করেছেন, রাজ্যের তরফে কোভিড তথ্য নিয়মিত কেন্দ্রকে পাঠানো হয়। এ প্রসঙ্গে ডিজিটাল তথ্যপ্রমাণের উল্লেখও করেছেন তিনি। এর পাশাপাশি লব আগরওয়ালের চিঠি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে পৌঁছনোর আগে কী ভাবে সংবাদমাধ্যমে পৌঁছে গেল, সেই নিয়েও অসন্তোষ জানিয়েছেন জর্জ। তাঁর বক্তব্য, বিস্তারিত তথ্য-সহ কেন্দ্রকে যথাযথ উত্তর দেওয়া হবে।
বীনা জানিয়েছেন, সংক্রমণ অনেকটাই কমে যাওয়ায় ১০ এপ্রিল রাজ্য করোনা তথ্য প্রকাশ করেনি। তবে সমস্ত তথ্যই কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হয়। দেশের একাধিক অঞ্চলে সংক্রমণ বৃদ্ধির ইঙ্গিত মিললেও কেরলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলেই জানিয়েছেন সে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তবে দিল্লিতে গত কয়েক দিন ধরে সংক্রমণ বৃদ্ধিতে বাড়ছে উদ্বেগ। আগামিকালই এই বিষয়ে আলোচনার জন্য বৈঠকে বসছেন দিল্লি বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ। সেখানেই ঠিক হবে, মাস্ক না পরলে ফের রাজধানীতে জরিমানার পথে হাঁটা হবে কি না। দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী বর্তমান পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে না হয়ে, সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, হাসপাতালে ভর্তির হার এখনও অনেকটাই কম। তবে মাস্ক পরার বার্তা দিয়েছেন তিনি। দিল্লি সংলগ্ন অঞ্চলে মাস্ক আবশ্যিক বলে ঘোষণা করেছে উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানা সরকারও।
হরিয়ানা, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, মিজোরাম— এই পাঁচ রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। তাই রাজ্যগুলিকে উপযুক্ত পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ।