ফাইল চিত্র।
নিরাপত্তার বহর এতটাই যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছাকাছি আসতে মন্ত্রী এবং আমলাদেরও এখন এসপিজি-র ছাড়পত্র নিতে হবে! কারণ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, এই মুহূর্তে মোদীর জীবনের ঝুঁকি ‘সর্বকালের মধ্যে সর্বোচ্চ’। ২০১৯ এর লোকসভা ভোট, তার আগে ছত্তীসগঢ় মাওবাদী প্রভাবিত রাজ্যে প্রচার— মোদীর নিরাপত্তা নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাই রাজ্যগুলির কাছে বিশেষ নির্দেশ পাঠিয়েছে কেন্দ্র।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে যে নির্দেশিকা রাজ্যগুলির কাছে পাঠানো হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, ‘অজ্ঞাত জায়গা থেকে জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। সে জন্য মন্ত্রী, আমলাদেরও কাছাকাছি আসতে দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসপিজি-র অনুমতি মিললে তবেই তাঁরা মোদীর কাছাকাছি আসতে পারবেন। প্রয়োজনে মন্ত্রী ও আমলাদের দেহতল্লাশিও করা হতে পারে।
আগামী লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের প্রচারের সময়ে মোদী যাতে রোড-শোর সংখ্যা কাটছাঁট করেন এবং রোড-শোর দূরত্ব কমানো হয়, এসপিজি-র তরফে সেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এসপিজি মনে করছে, রোড-শোর কথা যে হেতু আগাম জানিয়ে দেওয়া হয়, তাই প্রধানমন্ত্রীর জীবনের আশঙ্কাও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তুলনায় জনসভার ক্ষেত্রে নিরাপত্তার দিকটি সামলানো সহজ। এ বছরের শেষে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়ের মতো মাওবাদী অধ্যুষিত রাজ্যে ভোট। পরের বছর লোকসভা ভোট। এই সময়ে বিজেপির প্রচারের মূল দায়িত্বে থাকবেন মোদীই। ফলে আশঙ্কার দিকগুলিতে নজর রেখে তাঁকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।
পুণের পুলিশ সম্প্রতি আদালতে জানিয়েছে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধীর মতোই মোদীকেও হত্যা করার চেষ্টা হতে পারে বলে একটি চিঠি থেকে জানতে পেরেছেন তাঁরা। মাওবাদী-যোগ রয়েছে, গ্রেফতার হওয়া এমন এক জনের দিল্লির বাড়ি থেকে চিঠিটি মিলেছে। পাশাপাশি, কিছু দিন আগে বিশ্বভারতীতে মোদীর সফরের সময়ে প্রধানমন্ত্রীর ছয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তাঁর কাছে পৌঁছে গিয়েছিল এক যুবক। এই বিষয়গুলি সামনে রেখেই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নতুন করে পর্যালোচনা করা হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এ নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব গাউবার সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন। গোয়েন্দা বিভাগের কর্তারাও ছিলেন ওই বৈঠকে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা মনে করছেন, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলি স্পর্শকাতর। এই রাজ্যগুলিতে প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময়ে নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশের শীর্ষকর্তাদের বিশেষ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। নজর রাখা হচ্ছে বিশেষ কিছু সংগঠনের দিকেও।