ছবি: পিটিআই।
চাকরি দিন।
হাল আমলে নরেন্দ্র মোদীর কাছে এমন সোজাসুজি দাবি বোধহয় কেউ জানাননি। রাহুল গাঁধীরা দেশে-বিদেশে প্রধানমন্ত্রীকে নিরন্তর বিঁধে বলছেন, ‘‘বড় বড় কথা তো হচ্ছে, রোজগার কোথায়?’’ একটু ভাষা বদলে প্রায় একই তোপ দাগছে সঙ্ঘও। প্রশ্ন বিজেপির অন্দরেও। এই আবহে রোজগারের হাহাকার-সহ দেশের আর্থিক দুরবস্থার জবাব নিজের মতো করে দিতে কাল বিজেপির সব বিধায়ক, সাংসদ মিলিয়ে প্রায় ২ হাজার নেতাকে দিল্লিতে ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী। সঙ্গে ভোটের মন্ত্রও। তার আগেই আজ প্রধানমন্ত্রীর কাছে মোক্ষম দাবিটি করে বসলেন কাশ্মীরের এক যুবক। যাঁর সাফাই অভিযানের প্রশংসায় মোদী আজই রেডিওর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে অন্তত তিনশো শব্দ খরচ করেছেন!
বিলাল দার। বয়স ১৮। শ্রীনগরের হ্রদের আবর্জনা তুলে বিক্রি করে সংসার চালান। মোদী নিজেই জানান, অল্প বয়সে ক্যান্সার আক্রান্ত বাবার মৃত্যুর পর থেকে গত ৫-৬ বছর ধরে আবর্জনা তুলে বিক্রি করেন। এ যাবৎ ১২ হাজার কিলো আবর্জনা সাফ করেছেন। শ্রীনগর পুরসভা স্বচ্ছতার ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’ও বানিয়েছে তাঁকে। ইউনিফর্ম, গাড়ি দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘এই ছোট বয়সে স্বচ্ছতায় আগ্রহ সকলের কাছে অনুপ্রেরণার। আমার অভিনন্দন।’’
আরও পড়ুন:পুলিশের লাঠিতে উত্তাল বিএইচইউ
কিন্তু শুধু অভিনন্দনে চিঁড়ে যে ভেজে না, বিলাল নিজেই তা বুঝিয়ে দিলেন। বলে দিলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আমার নাম নিয়েছেন, আমি কৃতজ্ঞ। এ বারে চাকরি দিন। আমার পরিবারে আর কেউ রোজগার করে না।’’
বেকারির এই ছবিটাই মোদী জমানায় বারবার তুলেছে বিরোধীরা। রবিবারই মোদী বলেছেন, রেডিওর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে তিনি রাজনীতি করেন না, মানুষের মনের কথা বলেন। সেটা করতে গিয়ে কাশ্মীরের প্রসঙ্গ তুলে একাধারে উপত্যকাকে বার্তা আর পর্যটনকে উৎসাহ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাতে যে এই ফল হবে, কে জানত! বিজেপি নেতৃত্ব এ নিয়ে শব্দ খরচ করতে নারাজ। স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টি লুফে নিয়েছেন বিরোধীরা। বিলাল যে তাঁদের ‘মন কি বাত’ বলেছেন! কংগ্রেস বলছে, রাজনীতি ‘করি না’ বলেও রেডিও-র অনুষ্ঠানে রাজনীতিই করেন মোদী। সেটা করতে গিয়েই এ বারে তাঁর প্রচারের ফানুস ফেটে গিয়েছে। ফাটিয়েছেন মোদীরই উল্লেখ করা বিলাল। মোদী এ বারে বাস্তবের মুখোমুখি। এ বারে তো মানুষের ‘মনের কথা’র জবাব দিন!