চাইলে মনের বার্ধক্যকে মন্থর করা যায়। ছবি : সংগৃহীত।
বয়স বাড়ুক, কিন্তু মন এখনও কাঁচা— এমন তো অনেকেই বলেন। কিন্তু মন বা তাকে চালায় যে মস্তিষ্ক, তার কি বার্ধক্য আসে না? মনোবিদেরা বলছেন, অবশ্যই আসে। বয়সের সঙ্গে বৃদ্ধ হয় মানুষের বুদ্ধি, মনন, চিন্তাশক্তিও। সেটাই স্বাভাবিক নিয়ম। তবে চাইলে মনের বার্ধক্যকে মন্থর করা যায়। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা বলছে, নিয়মিত খাদ্যাভ্যাসে কিছু বদল আনলে তা সম্ভব। সেক্ষেত্রে বয়স বাড়লেও মস্তিষ্ক থাকবে তরতাজা। চিন্তার গতি শ্লথ হবে না। বরং ছুটবে টগবগিয়ে।
কী বলছে গবেষণা?
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য নিয়ে ওই গবেষণায় যোগ দিয়েছিল নেগেভের বেন গুরিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং লেপজ়িগ বিশ্ববিদ্যালয়। বিজ্ঞানীরা নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে যা পেয়েছেন, তা প্রকাশিত হয়েছে ‘দ্য আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিকাল নিউট্রিশন’-এ। সেখানেই গবেষকেরা লিখেছেন, মানুষের নিয়মিত খাদ্যাভ্যাসের উপরেই নির্ভর করে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য। বিশেষ করে যে সমস্ত খাবার খেলে মানুষের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, সেই সব খাবার নিয়মিত খেলে ভাল এবং সচল থাকে মস্তিষ্ক।
মনের বয়স বনাম দেহের বয়স
গবেষণা চলাকালীন বিভিন্ন বয়সের মানুষের মস্তিষ্ক স্ক্যান করে মস্তিষ্কের বয়স নির্ধারণ করেছিলেন গবেষকেরা। তাঁরা দেখেছেন, সব ক্ষেত্রে শরীরের বয়স আর মনের বয়স মেলেনি। অনেকেরই শরীরের বয়স বাড়লেও মস্তিষ্কের ততটা পরিপক্ক হয়নি।
কোন খাবারে জাদু?
পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যে সমস্ত খাবারে উদ্ভিদজাত পলিফেনল বেশি রয়েছে, সেই সব খাবার বেশি খেলে মস্তিষ্কে প্রদাহ হয় না। তাতে চিন্তাশক্তি এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভাল থাকে। হার্ভার্ড টিএইচ চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেল্থের গবেষকেরা জানাচ্ছেন, গ্রিন টি বা মাঙ্কাই মস্তিষ্কের বয়সবৃদ্ধি মন্থর করে দেয়। সেক্ষেত্রে গ্রিন মেডিটেরেনিয়ান ডায়েট মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য উপযোগী। এমনকি, এতে ডিমেনসিয়া এবং অ্যালঝাইমার্সের মতো মস্তিষ্কের স্নায়ুরোগকেও দূরে রাখা সম্ভব।
মেডিটেরেনিয়ান ডায়েট কী?
মেডিটেরেনিয়ান বা ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলিতে যে সমস্ত খাবার বাড়িতে রান্না করে খাওয়া হয়, তাই হল মেডিটেরেনিয়ান ডায়েট। ওই ধরনের খাদ্যতালিকায় মূলত থাকে অপরিশ্রুত দানাশস্য, ফল, শাকসব্জি, ডাল, অলিভ অয়েল, পরিমাণমতো ডিম এবং দুগ্ধজাত পণ্য, অল্প পরিমাণে মাংস এবং সামান্য পরিমাণে অ্যালকোহল।