যুদ্ধ স্মারক: আজ, সোমবার এরই উদ্বোধন করবেন মোদী। নিজস্ব চিত্র
কুম্ভে স্নান করে আজ পাঁচ সাফাইকর্মীর পা ধুয়ে দিয়েছেন। আগামিকাল উদ্বোধন করবেন জাতীয় যুদ্ধ স্মারক। বিরোধীরা ভোটের অঙ্কই দেখছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই সব কর্মসূচির মধ্যে।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে যে সেনা-জওয়ানেরা দেশ রক্ষায় জীবন দিয়েছেন তাঁদের স্মৃতিতেই দিল্লিতে ইন্ডিয়া গেট চত্বরে তৈরি হয়েছে ‘ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল। বিরোধীরা বলছেন, পুলওয়ামা হামলার জেরে দেশে অনেকে যুদ্ধের উন্মাদনায় হাওয়া দিচ্ছেন। এই সুযোগে জাতীয়তাবাদের পালে হাওয়া তুলতে চায় বিজেপি। লোকসভা ভোটের মুখে জাতীয় যুদ্ধ স্মারকের উদ্বোধন সেই লক্ষ্যেই আর একটি পদক্ষেপ। দেশবাসীর মনে দেশপ্রেম জাগাতে রাজধানীতে একটি মিছিলও করবে বিজেপি। পা মেলাবেন প্রাক্তন সেনারা। এক পদ এক পেনশন নিয়ে সরকারের দেওয়া সূত্র মানতে রাজি নন তাঁদের একটা বড় অংশ। বিজেপি বার্তা দিতে চাইছে, প্রাক্তন সেনাদের বেশির ভাগ তাদের পাশে রয়েছেন।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, ইন্ডিয়া গেট প্রাঙ্গণের পাশে ৪০ একর জমিতে তৈরি হয়েছে এই যুদ্ধ স্মারক। চারটি সমকেন্দ্রিক বৃত্ত বা চক্রের আকারে বানানো হয়েছে এর দেওয়াল। আকাশ থেকে যা অনেকটা চক্রব্যূহের মতো দেখাবে। চক্র চারটির নাম হল, অমর চক্র, বীরতা চক্র, ত্যাগ চক্র ও রক্ষক চক্র। চক্রের দেওয়ালগুলিতে লেখা হয়েছে ২৫ হাজার ৯৪২ জন নিহত সেনার নাম। ভারতের ইতিহাসে যে সব লড়াই শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়, সেগুলির মুর্যালও থাকছে দেওয়ালে। সবচেয়ে ছোট চক্রটি অর্থাৎ অমর চক্রের মাঝে রয়েছে স্তম্ভ। ইন্ডিয়া গেটের মতো এখানেও অনির্বাণ শিখা জ্বলবে কাল থেকে। নিহত সেনাদের সম্মানে অনুষ্ঠানের সময়ে দিল্লির আকাশে ‘মিসিং ম্যান ফরমেশন’-এ উড়বে বায়ুসেনার চার বিমান।
বিরোধীরা শুধু নন, মোদী নিজেই রাজনীতির আবর্তে টেনে এনেছেন এই স্মারক স্থলকে। ১৯৩১ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত সেনাদের স্মরণে দিল্লিতে ইন্ডিয়া গেটের নির্মাণ হয়। স্বাধীনতার ৭২ বছরেও কেন দেশের সেনাদের সম্মান জানিয়ে কোনও স্মারক স্থল তৈরি হল না, তা নিয়ে আজ কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন মোদী। ‘মন কী বাত’ রেডিয়ো অনুষ্ঠানে বলেন, ‘‘ভারতে সেনাদের জন্য কোনও ওয়ার মেমোরিয়াল নেই। এটা আশ্চর্যের। দুঃখেরও। দেশরক্ষায় যে সেনারা প্রাণ দিয়েছেন, তাঁদের বীরত্বকে সম্মান জানাতে এমন একটি স্মারক স্থলের প্রয়োজন ছিল। এবং আমি তা গড়ার সঙ্কল্প নিয়েছিলাম।’