ফাইল চিত্র।
গুজরাত দাঙ্গার ঘটনায় অভিযোগ ওঠায় ‘দীর্ঘ দিন ধরে যন্ত্রণা সহ্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী’— সংবাদসংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুক্রবার নরেন্দ্র মোদীকে ক্লিনচিট দেওয়ার বিরুদ্ধে মামলা খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই প্রসঙ্গে শাহ বললেন, ‘‘বিজেপির উপর থেকে কলঙ্ক মুছে গিয়েছে’’।
অমিত শাহ বলেন, ‘‘যাঁরা মিথ্যা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের মোদীজির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। গুজরাত হিংসা নিয়ে মোদীর বিরুদ্ধে সব অভিযোগ খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সবটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল। মোদীকে টার্গেট করা হয়েছিল, উনি দীর্ঘ লড়াই করেছেন। সব বিষ হজম করে লড়াই করেছেন। মোদীজিকে অনেক বদনাম করা হয়েছে। আজ জয়ী হয়েছেন।’’
গুজরাত হিংসা প্রসঙ্গে শাহ আরও বলেন, ‘‘সরকার হিংসা রুখতে সচেষ্ট ছিল। মুখ্যমন্ত্রী (সে সময় গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদী) বার বার শান্তির আবেদন করেছিলেন। মোদী সর্বদা আইনের পক্ষে ছিলেন। মিথ্যা তথ্যপ্রমাণ দেওয়া হয়েছিল। মিডিয়া ও এনজিও এ কাজ করেছে। তিস্তা শেতলওয়াড়ের এনজিও এর পিছনে ছিল। সিটের কোনও প্রভাব খাটানো হয়নি।’’
রাহুল গান্ধীকে নাম না করে কটাক্ষের সুরে শাহ বলেন, ‘‘গুজরাতের ঘটনায় তদন্ত করছিল সিট। সে সময় তদন্তে সহযোগিতা করেছিলেন মোদী। কিন্তু ধর্না দেননি’’। উল্লেখ্য, ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় রাহুলকে ইডির জিজ্ঞাসাবাদের প্রতিবাদে রাজধানীতে ধর্না-বিক্ষোভরত অবস্থায় দেখা গিয়েছে কংগ্রেস নেতাদের। সেই প্রসঙ্গেই শাহের এ হেন মন্তব্যে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
কংগ্রেসকে নিশানা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘শুধু মোদীর আমলেই হিংসা হয়েছে। অন্য কারও আমলে হয়নি? শিখ হত্যায় জড়িতরাই আঙুল তুলছেন। দাঙ্গার সময় পদক্ষেপ করতে দেরি করেনি গুজরাত সরকার। কিন্তু দিল্লিতে বহু শিখকে হত্যা করা হল, এখনও কেন কাউকে গ্রেফতার করা হল না? গুজরাত হিংসা কোনও মডেল নয়। কংগ্রেসের শাসনের পাঁচ বছর আর বিজেপির শাসনেক পাঁচ বছর তুলনা করে দেখুন।’’ বিজেপির আমলে দাঙ্গা কম হয়েছে বলেও দাবি করেন শাহ।
প্রসঙ্গত, গুজরাত দাঙ্গার ঘটনায় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ক্লিনচিট দিয়েছিল বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। ক্লিনচিট দেওয়ার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ এহসান জাফরির স্ত্রী জাকিয়া। সেই আর্জি শুক্রবার খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ২০০২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি অমদাবাদের গুলবার্গ সোসাইটিতে হিংসায় ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ছিলেন এহসান। তদন্তের জন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়েছিল। তথ্যপ্রমাণের অভাবে তৎকালীন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ ৬৪ জনকে ক্লিনচিট দেয় সিট। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেন জাকিয়া।