প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
সংসদে না হলেও, বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকে অন্তত লোকসভায় হওয়া হাঙ্গামাকে নিন্দনীয় বলে আখ্যা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একই সঙ্গে বিরোধীরা বিষয়টি নিয়ে সরব হয়ে নীরব ও প্রচ্ছন্ন সমর্থন জানাচ্ছেন বলে দাবি করে, বিষয়টা দুশ্চিন্তার বলে জানিয়েছেন মোদী।
বিরোধীদের পাল্টা বক্তব্য, যে ভাবে সাংসদদের দলে দলে সাসপেন্ড করা হচ্ছে, তা বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন। প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচারী পদক্ষপকে যুক্তিগ্রাহ্য করে তুলতে এখন বিরোধীদের দিকে আঙুল তোলার কৌশল নিয়েছেন।
সংসদীয় অধিবেশন চালু থাকলে সাধারণত প্রতি মঙ্গলবার সংসদ শুরুর আগে সংসদীয় দলের বৈঠক হয়ে থাকে বিজেপিতে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী মূলত দলীয় সাংসদদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা, সংসদে দল কী ভাবে চলবে, তা নিয়ে দিশা দেখিয়ে থাকেন। গত বুধবার সংসদের ভিতর ও বাইরে হাঙ্গামার পরে আজ ছিল দলীয় সাংসদদের সঙ্গে প্রথম বৈঠক। সেখানে আজ মোদী বলেন, ‘‘সংসদে সম্প্রতি যা হয়ে গেল, তা গণতন্ত্রে বিশ্বাসীরা কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারেন না। এই ধরনের ঘটনার অবশ্যই নিন্দা করা উচিত।’’
সূত্রের মতে, এর পরেই মোদী বিরোধীদের প্রতি আক্রমণ শানিয়ে বলেন, ‘‘কিন্তু দুর্ভাগ্যের হল, বিরোধীরা নির্বাচনে হারের হতাশা থেকে গোটা বিষয়টিকে রাজনৈতিক মোচড় দেওয়ার কৌশল নিয়েছেন।’’ সংসদে হাঙ্গামার পিছনে বেকারত্ব একটি বড় কারণ বলে সম্প্রতি মুখ খুলেছিলেন রাহুল গান্ধী। তার পর থেকেই ওই ঘটনার পিছনে বিরোধীদের সমর্থন রয়েছে বলে আক্রমণের কৌশল নেন বিজেপি নেতৃত্ব। মোদীর অভিযোগ, বিরোধীরা ওই ঘটনাকে নীরবে ও প্রচ্ছন্ন ভাবে সমর্থনও জানাচ্ছেন। ‘‘এই ধরনের সমর্থন চিন্তাজনক ও নিন্দনীয়,’’ বলেছেন তিনি।
বিরোধীরা যে ভাবে বিক্ষোভ করে সাসপেন্ড হওয়ার পথ ‘বেছে নিচ্ছেন’, আজ তারও সমালোচনা করেন মোদী। সূত্রের মতে, বৈঠকে মোদী বলেন, ‘‘বিরোধীরা যে পথে এগোচ্ছেন, তা থেকে স্পষ্ট, তাঁরা আপাতত কিছু দিন বিরোধী বেঞ্চেই বসে থাকতে চান এবং তার জন্যই তাঁরা অনুশীলন করছেন।’’ মোদীর দাবি, দেশবাসীও তাঁদের বিরোধী হিসাবে দেখার প্রশ্নে মনস্থির করে ফেলেছেন। বরং বিরোধীরা এখন যেখানে আছেন, সেখান থেকে তাঁদের আরও পিছনে ঠেলে দেওয়ার কথা ভাবছেন দেশবাসী! দলীয় সাংসদদের উদ্দেশে মোদীর পরামর্শ, এখন কেবল বিরোধীদের প্রকৃত স্বরূপ দেশবাসীর সামনে উন্মোচন করতে হবে। আর তা করতে হবে গণতন্ত্রের সীমার মধ্যে দাঁড়িয়ে।
অন্য দিকে বিরোধীদের মতে, যে ভাবে এই সরকার বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে, তা দেশের মানুষ দেখতে পাচ্ছেন। সংসদ সম্পূর্ণ বিরোধীশূন্য করে দিয়ে সরকার চালানো হচ্ছে। মানুষ বুঝতে পারছেন এই সরকারে আগামী দিনে গণতন্ত্রের নিরিখে বড় বিপদ ডেকে আনতে চলেছে। মানুষ বুঝতে পারছেন বলেই এখন হাঙ্গামার পিছনে বিরোধীদের সমর্থন রয়েছে বলে দাবি তুলছেন প্রধানমন্ত্রী। অথচ বাস্তব হল, ওই দুই উপদ্রবকারী মাইসুরুর বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমহার পাস নিয়ে লোকসভায় প্রবেশ করেছিলেন।