প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি- পিটিআই
শনিবার সকালে বেঙ্গালুরুতে রোড-শো। সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে চলল বেলা দেড়টা পর্যন্ত। তার পরে বিকেলে আরও দু’টি জনসভা। দক্ষিণের একমাত্র বিজেপি শাসিত রাজ্য কর্নাটকে ক্ষমতা ধরে রাখতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভোটের আগে শেষ সপ্তাহান্তে দিনভর প্রচারে ব্যস্ত থাকলেন। শনিবারের পরে রবিবারেও তাঁর একই রুটিন থাকছে। রবিবারও তিনি ফের বেঙ্গালুরুতে রোড-শো করবেন। তার পরে বিকেলে তাঁর দু’টি জনসভা থাকছে। দক্ষিণের কাশী বলে পরিচিত নাঞ্জানগুড়ে শ্রীকান্তেশ্বরের মন্দিরে পুজো দেবেন তিনি।
বিরোধী কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের মন্তব্য, “কাশ্মীরে জঙ্গি হানায় জওয়ানেরা প্রাণ হারাচ্ছেন। দিল্লির যন্তর মন্তরে বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলে পদকজয়ী কুস্তিগিরেরা ধর্নায় বসে রয়েছেন। মণিপুরে আগুন জ্বলছে। প্রধানমন্ত্রী শুধু ভাবছেন, কী ভাবে কর্নাটকে বিজেপিকে শোচনীয় পরাজয় থেকে রক্ষা করা যায়! হতাশাজনক অগ্রাধিকার।”
শুধু প্রধানমন্ত্রী নন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও শনিবার কর্নাটকে চারটি জনসভা করেছেন। সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষণ থেকে বজরং দলের উপরে নিষেধাজ্ঞার প্রতিশ্রুতি নিয়ে কংগ্রেসকে নিশানা করেছেন। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ অভিযোগ তুলেছেন, বজরং দলকে নিষিদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কংগ্রেসের হিন্দুদের আস্থার সঙ্গে খেলা করছে। বিরোধীদের প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রীর মতো অমিত শাহরও কি দিল্লিতে বসে কাশ্মীরে হামলা বা মণিপুরে অশান্তি নিয়ে মাথা ঘামানো উচিত নয়?
প্রধানমন্ত্রী অবশ্য বেঙ্গালুরুর রোড-শোয়ের পরে আপ্লুত। রাস্তার দু’পাশে ভিড় দেখে মোদী টুইটারে লিখেছেন, বেঙ্গালুরু যে বিজেপিকেই চায়, তা স্পষ্ট। বেঙ্গালুরু শহরের আটটি বিধানসভা-সহ মোট ১৩টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে দিয়ে রোড-শো করেছেন মোদী। মাথায় মাইসুরু পেটা বা পাগড়ি পরিহিত মোদীকে দেখতে ১০ লক্ষ মানুষ রাস্তায় নেমেছিলেন বলে বিজেপির দাবি। রোড-শোয়ের সময় মোদীর উপরে পুষ্পবৃষ্টির জন্য বিজেপি ৪০ টন ফুলের ব্যবস্থা করেছিল। লাউডস্পিকারে নাগাড়ে মোদীর ‘জয় বজরংবলী’, ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান বাজানো হয়েছে।
রোড-শোয়ের পরে বাদামি ও হাভেরিতে জনসভায় মোদী বিজেপি নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে বলেছেন, তাঁর রোড-শো বা জনসভার ভরসায় বাড়ি ফিরে ঘুমিয়ে পড়লে চলবে না। প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে মোদীর বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। একটি বুথেও হারা চলবে না। কংগ্রেসের অভিযোগ, হার বাঁচাতে মরিয়া মোদীর রোড-শোয়ে অতিরিক্ত ভিড় দেখাতে বিজেপি ভিডিয়োয় কারচুপি করেছে। রোড-শোয়ের জন্য শহরের মধ্যে অ্যাম্বুল্যান্স আটকে পড়েছে। কিন্তু তিনি এ সবের পরোয়া করেন না। তিনি শুধু তাঁর ‘গ্র্যান্ড তামাশা’ নিয়ে ব্যস্ত। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের অভিযোগ, শনিবারের রোড-শোয়ে তেমন সাড়া না পেয়ে রবিবারের রোড-শোয়ের দৈর্ঘ্য কমিয়ে ৬.৫ কিলোমিটার করে দেওয়া হয়েছে। বিজেপি দেওয়াল লিখন টের পাচ্ছে। বিজেপির পাল্টা যুক্তি, রবিবার নিট পরীক্ষা রয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর রোড-শো সকালে শুরু করে দ্রুত শেষ করে ফেলা হবে।