রামবিলাস পাসোয়ানকে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই
বিহারের দলিত সম্প্রদায়ের কোনও গরিব মানুষ দিল্লিতে চিকিৎসা বা অন্য প্রয়োজনে এলে তাঁদের জানা ছিল, ১২ নম্বর জনপথে রামবিলাস পাসোয়ানের বাড়িতে গেলে সাহায্য মিলবেই।
শুক্রবার সকাল থেকে সেই বাড়িতেই বাবার দেহের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন চিরাগ পাসোয়ান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রয়াত মন্ত্রীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসে তাঁর কাঁধে হাত দিতেই কেঁদে ফেললেন চিরাগ। তাঁকে অনেকক্ষণ সান্ত্বনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
রামবিলাসের মৃত্যুর ফলে লোক জনশক্তি পার্টির দায়িত্ব এখন চিরাগের কাঁধে। চিরাগের দল দিল্লিতে এনডিএ-র শরিক হলেও বিহারে এনডিএ-তে শামিল হয়নি। নীতীশ কুমারের জেডিইউ-এর বিরুদ্ধে তো বটেই, কিছু আসনে বিজেপি-র বিরুদ্ধেও প্রার্থী দিয়েছে এলজেপি। এরই মধ্যে এলজেপি-র ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
শরীর অসুস্থ বুঝে বেশ কিছু দিন আগেই চিরাগের হাতে রামবিলাস দলের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু বলিউড ফেরত চিরাগের সঙ্গে এলজেপি-র নিজস্ব দলিত ভোটব্যাঙ্কের এখনও সেই টান তৈরি হয়নি। চিরাগ বিহারি আবেগ উস্কে দিতে চাইছেন। পাশাপাশি রামবিলাসের মৃত্যুতে সহানুভূতির হাওয়ায় দলিত ভোটের বড় অংশ এলজেপি প্রার্থীরা পেতে চলেছেন মনে পর্যবেক্ষকদের মত। সূত্রের খবর, সেই কারণেই শনিবার পটনায় মন্ত্রীর শেষকৃত্যের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
চিরাগকে একাই সহানুভূতি কুড়োতে দিতে নারাজ বিজেপি। শুক্রবার রামবিলাসের দেহ দিল্লি থেকে পটনায় নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা করা ছাড়াও শনিবার রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় রামবিলাসের শেষকৃত্য হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। বিজেপির তরফে সেখানে থাকবেন বিহারের নেতা, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। এ দিনই রামবিলাসের দফতরের দায়িত্ব বিজেপির পীযূষ গয়ালের কাঁধে দিয়েছেন মোদী।
জনপথে রামবিলাসের দু’দশকের ঠিকানা বারো নম্বর বাড়ির পাশেই সনিয়া গাঁধীর বাসভবন—দশ জনপথ। আজ রাহুল গাঁধী সেখান থেকে পায়ে হেঁটেই রামবিলাসকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে যান। মোদী সরকারের আগে মনমোহন সরকারেও মন্ত্রী ছিলেন রামবিলাস। রামবিলাসকে শ্রদ্ধা জানিয়ে চিরাগকে
লেখা চিঠিতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ জানিয়েছেন, ‘২০০৪ সালে আমার নেতৃত্বে গঠিত ইউপিএ সরকারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন রামবিলাস পাসোয়ান। ওঁনার সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে।’ রামবিলাসকে শ্রদ্ধা জানাতে যান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও।