দু’দিনের কেরল সফরে কোচি পৌঁছলেন মোদী। পিটিআই
আগামী ১০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে পিতৃপক্ষ। অতীতে পিতৃপক্ষের সময়ে কোনও শুভ কাজ বা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া এড়িয়ে যেতে দেখা গিয়েছে বিজেপি নেতৃত্বকে। তাই দিল্লির রাজনীতিতে জল্পনা, পিতৃপক্ষ শুরু হওয়ার আগেই সম্ভবত মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ সেরে ফেলবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আজ দলের সাধারণ সম্পাদকদের একাংশের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সূত্রের মতে, সেখানে মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ ও ভোটমুখী হিমাচল প্রদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সবিস্তার আলোচনা হয়। গত বছরের জুলাই মাসে শেষ বার মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ হয়েছিল। তার পরে কেন্দ্রীয় রাজনীতি বিস্তর পরিবর্তনের সাক্ষী থেকেছে। নীতীশ কুমারের দল জেডিইউ এনডিএ শিবির ত্যাগ করায় ইস্তফা দিয়েছেন সেই দল থেকে ইস্পাত মন্ত্রকের দায়িত্বে থাকা আর সি পি সিংহ। রাজ্যসভায় মেয়াদ বৃদ্ধি না হওয়ায় মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি। ওই দু’টি মন্ত্রকের দায়িত্ব নতুন কারও হাতে তুলে দিতে হবে মোদীকে। এ ছাড়া মহারাষ্ট্রে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সদ্য ক্ষমতায় এসেছে শিবসেনার বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় অন্তত দু’টি আসন তাঁদের দেওয়ার বাধ্যবাধকতাও রয়েছে বিজেপির।
লোকসভা নির্বাচনের আগে সম্ভবত এটিই হবে মন্ত্রিসভার শেষ রদবদল। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘আসন্ন নির্বাচনগুলির কথা মাথায় রেখে বেশ কিছু কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে মন্ত্রক থেকে সরিয়ে সংগঠনে নিয়ে আসার কথা ভাবা হয়েছে। তেমনই সংগঠন থেকে বেশ কিছু নেতাকে মন্ত্রী করার কথা ভাবা হয়েছে।’’ আজকের বৈঠকে সেই সম্ভাব্য নামগুলি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সূত্রের মতে, রাজস্থানের বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতকে রাজস্থানে পাঠানোর বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে। মন্ত্রিত্ব হারাতে পারেন মধ্যপ্রদেশ থেকে কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় মন্ত্রী হওয়া বীরেন্দ্র কুমার। বিজেপি নেতৃত্বের মতে, লোকসভার আগে যে রাজ্যগুলিতে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে, সেই রাজ্যগুলির প্রতিনিধিত্ব বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়। এ দিকে আজ দলবিরোধী কাজের অভিযোগে দিল্লি বিজেপির প্রায় এক ডজন পদাধিকারীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দিল্লির রাজেন্দ্রনগর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে আম আদমি পার্টির হয়ে কাজ করার অভিযোগে এঁদের বহিষ্কার করা হয়। বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছেন, গোটা দেশে দলবিরোধী কাজ রুখতেই এ ধরনের কড়া পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর মোদীর জন্মদিন। সেই দিন থেকে ২ অক্টোবর মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর জন্মদিন পর্যন্ত ১৬ দিন প্রতি বারের মতোই ‘সেবা সপ্তাহ’ চালানোর জন্য দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিংহ। কর্মীদের উদ্দেশে লেখা চিঠিতে ওই ১৬ দিন তাঁদের নিজের নিজের এলাকায় রক্তদান, স্বাস্থ্য শিবির, অঙ্গহীনদের কৃত্রিম অঙ্গ দান ছাড়াও যক্ষ্মা রোগ নির্মূল করতে বিশেষ অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া প্রশাসক হিসেবে মোদীর কুড়ি বছরের জীবনকে তুলে ধরতে দেশের প্রতিটি জেলায় প্রদর্শনীর আয়োজন করারও পরিকল্পনা নিয়েছে দল।