প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল ছবি।
করিডর ধরে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রীর দফতরের দিকে এগোচ্ছেন। দু’পাশে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে হাততালি দিচ্ছেন সরকারি অফিসার, কর্মচারীরা।
তৃতীয় বার নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রীর দফতরে ফেরার পরে দিল্লির রাইসিনা হিলসের সাউথ ব্লকে এই দৃশ্য প্রত্যাশিত ছিল। তবে মোদী সেখানেই থামলেন না। ছোটখাটো জনসভার আদলে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের আমলা, কর্মীদের জমায়েত করে তাঁর সাফল্যের কৃতিত্ব দিলেন সরকারি কর্মচারীদেরও। বললেন, ‘‘এই জয়ের বড় দাবিদার সরকারি কর্মচারীরাও। যাঁরা একটি দৃষ্টিভঙ্গির কাছে নিজেদের সমর্পণ করেছেন।’’ তবে যা তিনি বললেন না তা হল, ফের ক্ষমতায় ফিরলেও বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তাই তাঁকে শরিকদের ভরসায় সরকার গড়তে হচ্ছে। যে কোনও সময়ে শরিকরা সমর্থন প্রত্যাহার করে নিলে সরকার নড়বড়ে হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে।
সূত্রের খবর, মোদী সরকার আগামী ২০ জুন লোকসভায় নিজের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারে। এক বার সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণিত হয়ে গেলে আগামী ছয় মাসের জন্য সরকার নিশ্চিত। তার আগে নতুন লোকসভার সাংসদেরা শপথ নেবেন। স্পিকার পদে নির্বাচনও ২০ জুন হতে পারে।
আজ নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকের আগেই কৃষকদের জন্য পিএম-কিসানের পরবর্তী কিস্তির টাকা মঞ্জুরির ফাইলে সই করেন মোদী। রুটিন সিদ্ধান্ত। তবে সেটাই ঢাক পিটিয়ে মোদী সরকারের চাষিদের প্রতি দায়বদ্ধতা হিসেবে প্রচার হয়েছে।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় আরও তিন কোটি বাড়ি তৈরির অর্থ সাহায্য মঞ্জুর হয়েছে। এরপরে অর্থ মন্ত্রক কেন্দ্রীয় করের ভাগ হিসেবে রাজ্যগুলির জুন মাসে প্রাপ্য টাকার সঙ্গে অতিরিক্ত এক কিস্তির টাকা মঞ্জুর করেছে। মোট ১ লক্ষ ৩৯ হাজার কোটি টাকার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ পাচ্ছে ১০,৫১৩ কোটি টাকা। এই টাকা মঞ্জুরও রুটিন এবং আগেই গৃহীত হয়েছিল, যদিও কৃষকদের কিস্তির টাকা দেওয়ার মতো ওই সিদ্ধান্ত (নতুন সরকারের প্রথম সিদ্ধান্ত বলে অভিহিত করে) নিয়েও ঢাকঢোল পেটানো হচ্ছে।
নির্বাচন শুরুর আগে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীদের বলেছিলেন, নতুন সরকার গঠনের প্রথম ১০০ দিনের কাজের রূপরেখা তৈরি করে রাখতে। সূত্রের খবর, প্রতিটি মন্ত্রক আগামী সপ্তাহ থেকে তাদের পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কাছে তুলে ধরবে। ‘নাগরিকদের ক্ষমতায়নের সরকার’-এর নীতিকে মন্ত্র করে এই রূপরেখা চূড়ান্ত হবে। মোদী বলেছেন, সবাইকে বড় মাপের পরিকল্পনা তৈরি করতে।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ‘বিকশিত ভারত’-এর লক্ষ্যে যোগ দেওয়ার জন্য সরকারি কর্মচারীদের আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ইচ্ছা ও স্থিরতার যোগফল হল সঙ্কল্প। সঙ্কল্প ও পরিশ্রমের যোগফল সিদ্ধি। তিনি বলেন, ‘‘শুরু থেকে চেষ্টা করেছি, প্রধানমন্ত্রীর দফতর সেবার অধিষ্ঠান হিসেবে ‘পিপলস পিএমও’ বা আমজনতার প্রধানমন্ত্রীর দফতর
হয়ে ওঠে।’’