প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
জেগে উঠছেন নারীরা। সেই কারণে অতীতে বেশ কিছু রাজনৈতিক দল মহিলা আসন সংরক্ষণ বিলের বিরোধিতা করলেও, এ যাত্রায় তারা তা করার সাহস পাননি বলে আজ মুখ খুললেন নরেন্দ্র মোদী। তবে লোকসভা নির্বাচনের আগে নিজের লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীতে প্রধানমন্ত্রী যখন মহিলা সমাজের মন জয়ে ব্যস্ত, তখন তাঁরই দলের বর্ষীয়ান মহিলা নেত্রী উমা ভারতী ভোটমুখী মধ্যপ্রদেশ থেকে বার্তা দিয়েছেন যে ওই বিলে ওবিসি সমাজের মহিলাদের জন্য আলাদা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে প্রয়োজনে আন্দোলনে নামবেন তিনি। দলের মধ্যে লড়াকু নেত্রী বলে পরিচিত উমার ওই বার্তায় অস্বস্তিতে বিজেপি নেতৃত্ব।
মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশের দু’দিনের মাথায় আজ বারাণসী সফরে আসেন মোদী। আজ সেখানে একাধিক স্কুল ও একটি আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করেন তিনি। যা উপলক্ষে আজ বারাণসীতে উপস্থিত ছিলেন কপিল দেব, সুনীল গাওস্কর, সচিন তেন্ডুলকর, ভারতীয় বোর্ডের শীর্ষ কর্তা রজার বিন্নি, অমিত শাহ-পুত্র জয় শাহেরা।
তবে আজ মোদীর উপস্থিতিতে তাঁর লোকসভা কেন্দ্রে যে ‘নারী শক্তি বন্দন সমারোহ’ নামে জনসভাটি হয়, তাতে উপস্থিতি ছিল শুধু মহিলা কর্মীদের। সেই সভায় মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ প্রসঙ্গে সনাতন ভারতের ঐতিহ্যকে তুলে ধরেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘ নেতৃত্বদানে মহিলাদের এগিয়ে আসা বাকি দুনিয়ার কাছে আধুনিক মনে হতে পারে। কিন্তু এ দেশে মহাদেবের পুজোর আগে মা পার্বতী ও গঙ্গার পুজো করা হয়।’’
এ দেশে নারীদের ক্ষমতায়ন হচ্ছে তাই মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ সময়ের দাবি ছিল বলেই ব্যাখ্যা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘ওই বিলটি গত তিন দশক ধরে আটকে ছিল। ওই বিলটির যাঁরা এক সময়ে নিরন্তর বিরোধিতা করে এসেছিলেন, আজ আপনাদের শক্তির বলে তাঁরাও এর সমর্থনে সংসদের উভয় কক্ষে এগিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন। সব রাজনৈতিক দল আজ আপনাদের ভয়ে ভীত। তাই ওই বিল পাশ হয়েছে। এটাই আপনাদের শক্তি।’’
বিজেপি খুব ভাল করেই জানে, মহিলা ভোটারেরা যদি তাঁদের পাশে এক হয়ে দাঁড়ান, তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসতে অসুবিধা হবে না দলের। সেই কারণে এ বার লোকসভার আগে ওই বিলটি পাশ করিয়ে মহিলা ভোটারদের সমর্থন কুড়াতে মাঠে নেমেছেন মোদী। কিন্তু দলকে অস্বস্তির মুখে ফেলে দিয়েছেন বিজেপির বর্ষীয়ান মহিলা নেত্রী উমা ভারতী। গোড়া থেকেই বিরোধী দলগুলির ধাঁচে মহিলা সংরক্ষণ বিলে ওবিসি মহিলাদের জন্য আলাদা করে সংরক্ষণের তদ্বির করে সরব ছিলেন উমা। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আলাদা করে চিঠিও লেখেন তিনি।
কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় আজ এ নিয়ে ভোপালে ওবিসি নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন উমা। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, ওই আইনে ওবিসি মহিলাদের সংরক্ষণ না দিলে ওবিসি সমাজের কাছে ভুল বার্তা যাবে। তাই ওবিসি মহিলাদের সমর্থনের দাবিতে প্রয়োজনে দলের বিরুদ্ধে যেতেও পিছপা হবেন না।
কংগ্রেসও আজ ওবিসি মহিলাদের সংরক্ষণের দাবিতে ফের সরব হয়েছে। মূলত বিজেপির ওবিসি ভোট ব্যাঙ্কে চিড় ধরাতেই ওই কৌশল নিয়েছে কংগ্রেস। আজ জয়পুরে একটি সভায় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেন, ‘‘কংগ্রেস ওবিসি সমাজের মহিলাদের সংরক্ষণ দিতে বদ্ধপরিকর। ২০২৪ সালে ক্ষমতায় এলেই কংগ্রেস সরকারের প্রথম
কাজ হবে, মহিলা সংরক্ষণ বিলে সংশোধনী এনে ওবিসি মহিলাদের সংরক্ষণকে নিশ্চিত করা।’’