(বাঁ দিকে) আরব আমিরশাহির প্রেসিডেন্ট শেখ মোহামেদ বিন জ়ায়েদ আল নাহিয়ান এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: সংগৃহীত।
ফ্রান্স থেকে আজ সকালে আরব মুলুকে পৌঁছতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্য অপেক্ষা করে ছিল রাজকীয় সংবর্ধনা। ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে আবু ধাবির বিমানবন্দরে হাজির হয়েছিলেন সংযুক্ত আবর আমিরশাহির যুবরাজ। প্রথমে প্রেসিডেন্ট প্যালেসে সংবর্ধনা তার পর মোদীর সম্মানে সাজানো হয়েছিল সম্পূর্ণ নিরামিষ ভোজ। আর সেই উষ্ণ অভ্যর্থনার মধ্যেই বাণিজ্য ও শিক্ষায় নিবিড় সম্পর্ক তৈরির বার্তা দিল দু’দেশ।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহির প্রেসিডেন্ট শেখ মোহামেদ বিন জ়ায়েদ আল নাহিয়ান সঙ্গে আজ বৈঠকে বসেছিলেন মোদী। সেখানে তৈরি হয়েছে দু’দেশের বাণিজ্য সহযোগিতার নতুন রূপরেখা। এ বার বাণিজ্যের সময়ে নিজেদের মুদ্রা ব্যবহার ও ইউপিআই বিনিময় ব্যবস্থা চালু করতে রাজি হয়েছে দু’দেশ। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে সহজ করে তুলতে শুধু এই নতুন পদক্ষেপই নয়, শিক্ষার সূত্রেও আমিরশাহিকে কাছাকাছি আনতে আবু ধাবিতে গড়ে উঠতে চলেছে আইআইটি-র একটি ক্যাম্পাস।
দু’দেশের মুদ্রার ব্যবহারে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের পথ আরও সুগম হবে বলেই আশাপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এ নিয়ে চুক্তিও হয়েছে দু’দেশের। মোদী বলেছেন, ‘‘ভারত আর আমিরশাহির সহযোগিতার এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক। এতে দু’দেশেরই বাণিজ্য বাড়বে। আন্তর্জাতিক স্তরে ব্যবসায়িক সহযোগিতার পথ আরও সহজ হয়ে উঠবে।’’ প্রধানমন্ত্রীর মতে, গত বছর আমিরশাহির সঙ্গে সার্বিক বাণিজ্য সহযোগিতার চুক্তি হওয়ার পর থেকে দু’দেশের বাণিজ্যের বহর প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট নাহিয়ানের দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করেছেন মোদী। তাঁর কথায়, ‘‘উন্নয়নের কাজে প্রেসিডেন্ট নাহিয়ানের ভাবনা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। তিনি আমাকে ভাইয়ের মতো ভালবাসেন। প্রেসিডেন্ট নাহিয়ান ভারতের সত্যিকারের বন্ধু।’’ যে ভাবে বাণিজ্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত ও আমিরশাহির মধ্যে সহযোগিতা বাড়ছে, তার পিছনে প্রেসিডেন্টের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মোদী। বলেছেন, ‘‘ভারতের প্রতিটি নাগরিক আপনাকে এক জন প্রকৃত বন্ধু মনে করে।’’
তবে শুধু বাণিজ্য সহযোগিতাই নয়, শিক্ষার আদানপ্রদানকে ব্যবহার করেও সম্পর্কের ভবিষ্যৎ তৈরিরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। আর সেই লক্ষ্যেই আবু ধাবিতে গড়ে উঠবে আইআইটি দিল্লির একটি ক্যাম্পাস। মোদী বলেছেন, ‘‘আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রসারের জন্য এটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ একটা সিদ্ধান্ত। শিক্ষার বাঁধনে ঐক্যবদ্ধ হবে ভারত আর আমিরশাহি। বিকশিত হবে উদ্ভাবনী শক্তি। যা এই দু’দেশ তথা গোটা বিশ্বকে সমৃদ্ধ করবে।’’
এ বছরের শেষে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের সম্মেলন সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে বসতে চলেছে। এই সম্মেলনে নেতৃত্ব দেবে আমিরশাহি। মোদী নিজে এই সম্মেলনে যোগ দিতে সম্মত হয়েছেন।