দেহরাদূনে যোগ দিবসে যোগাসন করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —পিটিআই
উপলক্ষ আন্তর্জাতিক যোগ দিবস। লক্ষ্য জনসংযোগ নাকি রোগ-বিয়োগ, সেটা স্পষ্ট নয়। তবে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, লাদাখ থেকে চেরাপুঞ্জি, কার্যত গোটা দেশ বাঁধা পড়ল যোগসূত্রে। আসন পেতে যোগাসনে মাতলেন উপরাষ্ট্রপতি থেকে প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রী থেকে এলি, তেলি বনমালিও। গোটা পর্বের শেষে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা, যোগ-ই পারে বিশ্ববাসীর মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করতে।
কয়েকদিন আগেই বিরাট কোহলির চ্যালেঞ্জের জবাবে দিল্লিতে নিজের বাসভবনে যোগাসন ও শারীরিক কসরতের ছবি-ভিডিও পোস্ট করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন কর্ণাটকের নবনির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামীকে। আর বৃহস্পতিবার ছিল কার্যত মণিকাঞ্চন যোগ। উত্তরাখণ্ডের দেহরাদূনে যোগ দিবসে মোদি নেতৃত্ব দিলেন প্রায় ৫০ হাজার জনকে। সাদা টি শার্ট, পাজামায় ফরেস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের লনে নিজেও করলেন একাধিক আসন। ছিলেন অন্যান্য মন্ত্রীরাও।
যোগাসন শেষে মোদী বলেন, ‘‘দেহরাদূন থেকে ডাবলিন, সাংহাই থেকে শিকাগো, জাকার্তা থেকে জোহানেসবার্গ, গোটা বিশ্ব আজ যোগাসনে মেতেছে। যোগ প্রাচীন অথচ আধুনিক, স্থির অথচ গতিশীল। তাই যোগ সুস্থতার জন্য সুন্দর। যোগ অতীত ও বর্তমানের প্রাসঙ্গিকতার সঙ্গেই ভবিষ্যতের দিশারি। তাই দৈনন্দিন জীবনের নানা অসুস্থতা ও মানসিক সমস্যার সমাধান হতে পারে যোগাসন।’’ আর এবারের যোগ দিবসের মূল কেন্দ্র হিসাবে দেহরাদূনকে বেছে নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত।
দেহরাদূনে যোগাসনে প্রধানমন্ত্রী। —পিটিআই
আরও পড়ুন: মোদীর যোগবার্তায় যোগ দিলেন না রাজ্যের পুলিশ কর্তারা
প্রধানমন্ত্রী যখন দেহরাদূনে, উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু তখন মুম্বইয়ে একটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত যোগাসন অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ছিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশও।
প্রধানমন্ত্রী যেখানে নিজে যোগ নিয়ে এরকম উল্লসিত, রাষ্ট্রপুঞ্জ থেকে ২১ জুনকে বিশ্ব যোগ দিবস হিসেবে ছিনিয়ে এনেছেন, সেখানে তাঁর পারিষদরাও যে তা নিয়ে মাতামাতি করবেন, তাতে অভিনবত্ব কিছু নেই। রাজনাথ সিং, সুষমা স্বরাজ, নিতিন গডকড়ী সুরেশ প্রভূ, রামবিলাস পাসোয়ান, রবিশঙ্কর প্রসাদ কে নেই সেই তালিকায়। যে যেখানে ছিলেন, সেখানেই সাধ্যমতো শবাসন বা ময়ূরাসন করেছেন।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া আবার নিজের বাসভবনে বিছানায় শুয়েই শারীরিক কসরত করেন। অন্যদিকে, পটনায় বিহারের রাজ্যপালের আয়োজিত যোগ দিবসের অনুষ্ঠান এড়িয়ে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। ওয়াকিবহাল মহল অবশ্য তার মধ্যেও রাজনৈতিক যোগ-বিয়োগের অঙ্ক কষছেন।
আরও পড়ুন: রোগমুক্তির জন্য যোগ করছেন? শরীরের ক্ষতি হচ্ছে না তো?
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আসন পেতে যোগাভ্যাসের এই ছবির সঙ্গেই ব্যতিক্রমী চিত্রও ধরা পড়েছে। বিশাখাপত্তনমে যেমন ডুবোজাহাজের মধ্যেই যোগ দিবস পালন করেন ভারতীয় নৌবাহিনীর ইস্টার্ন কম্যান্ডের জওয়ানরা। ইন্দো তিব্বত সীমান্তরক্ষী বাহিনী লাদাখে বরফের মরুভূমিতেও যোগাভ্যাস করে। আবার পূর্ব লাদাখে ভারত-চিন সীমান্তে দুই দেশএর সেনা জওয়ানরা যৌথ ভাবে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালন করে। নৌবাহিনীর মালাবার উপকূলে ভারত-জাপান যৌথ যোগ দিবসের আয়োজন করা হয়। প্রশান্ত মহাসাগরের গুয়াম উপকূলে যুদ্ধ জাহাজেই ভারত-মার্কিন যৌথ যোগ দিবস পালন করা হয়।