নাগাল্যান্ডে হর্নবিল উৎসবের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী। ছবি: উজ্জ্বল দেব
অটলবিহারী বাজপেয়ী থেকে নরেন্দ্র মোদী। দু’জনের শাসনকালের মধ্যে কেটে গিয়েছে এক দশক। কেন্দ্রে ইউপিএ জমানায় দেশের প্রধানমন্ত্রীর পা পড়েনি নাগাল্যান্ডে। আজ সে রাজ্যের কিসামা গ্রামে ‘হর্নবিল’ উৎসবের উদ্বোধনে সেই প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী মোদী বললেন, “১০ ঘণ্টার দুরত্ব মেটাতে সময় লাগল ১০ বছর। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কথা দিলাম, এমন আর হবে না।” তার পরই নাগাল্যান্ড তথা উত্তর-পূর্বের জন্য এক গুচ্ছ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করলেন।
বুনো শুয়োরের দাঁত-শোভিত লাল টুপি, যোদ্ধাদের পোশাক, দু’হাতে বল্লম নিয়ে ‘যোদ্ধা’র সাজে মোদী নাগা ভাষায় সকলকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, “এখানকার প্রকৃতিই সম্পদ। তার হাত ধরেই আসবে বিনিয়োগ। বাড়বে পর্যটন শিল্পও।” তাঁর কথায়, “বাস্তুশাস্ত্রের নিয়ম মেনেই দেশের উত্তর-পূর্বের উন্নয়ন প্রয়োজন। সে জন্য ৫৩ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হবে। দেশের এই প্রান্তে ১৪টি নতুন রেলপথ গড়তে ২৮ হাজার কোটি টাকা দেবে কেন্দ্র।” প্রধানমন্ত্রী জানান, নাগাল্যান্ড-সহ উত্তর-পূর্বের ছ’টি রাজ্যে বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা ও সেখানকার প্রতিটি প্রান্তে মোবাইল যোগাযোগ ব্যবস্থা ছড়িয়ে দিতেও ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
মোদী জানিয়েছেন, উত্তর-পূর্বের ছাত্রছাত্রীদের জন্য ‘ঈশানোদয়’ ও ‘ঈশান বিকাশ’ নামে দু’টি নতুন প্রকল্প চালু করা হবে। প্রথমটির অধীনে, প্রতি বছর ১০ হাজার পড়ুয়াকে বিশেষ বৃত্তি দেওয়া হবে। দ্বিতীয় প্রকল্পে, এখানকার ২ হাজার ছাত্রছাত্রী ও ৫০০ শিক্ষককে প্রতি বছর দেশের অন্য প্রান্তের নামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী টি আর জেলিয়াং বলেন, “রাজ্যবাসী স্থায়ী শান্তি চান। ছ’দশক ধরে জারি ভারত-নাগা সমস্যার সমাধানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইছি।” পাশাপাশি তাঁর রাজ্যের জন্য একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, পশুচিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ও চান জেলিয়াং।
হর্নবিল উৎসবের উদ্বোধনে রাজ্যপাল পি বি আচার্য, সাংসদ নেফিয়ু রিওর পাশাপাশি হাজির ছিলেন মায়ানমারের কাচিন ও সাগাইং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও।