কুয়াশায় মোড়া দিল্লির রাজপথে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে গাড়ি। ছবি: টুইটার থেকে
কুয়াশার জেরে খাদে পড়ে গেল গাড়ি। গ্রেটার নয়ডা এলাকায় এই ঘটনায় দুই নাবালক-সহ ছ’জনের মৃত্যু হল। আহত আরও পাঁচ জনের চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে। অন্য দিকে রাজধানী দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকায় ঘন কুয়াশার জেরে বিপর্যস্ত ট্রেন ও বিমান পরিষেবা। বহু ট্রেন দেরিতে চলছে। দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় দিল্লি বিমানবন্দরেও উড়ান চলাচলে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। ভোগান্তির শিকার যাত্রীরা।
রবিবার রাত থেকেই গভীর কুয়াশার চাদরে মোড়া দিল্লি ও লাগোয়া শহরগুলি। তার জেরে দৃশ্যমানতা প্রচুর কমে যায়। ভোর থেকে সেই কুয়াশা আরও বাড়ে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, রাজধানীর রাস্তায় দৃশ্যমানতা ৫০ মিটারেরও কম ছিল সকালের দিকে। সকালেও কুয়াশার দাপটে রাস্তায় যানবাহনের গতি ছিল অত্যন্ত ধীর। হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, কুয়াশার জেরে লোকাল ও এক্সপ্রেস মিলিয়ে অন্তত ৩০টি ট্রেন দেরিতে চলছে।
অন্য দিকে দিল্লির ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং বিমান পরিষেবা সংস্থাগুলির পক্ষ থেকে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, খারাপ আবহাওয়ার জন্য বিমান ওঠানামায় দেরি হচ্ছে। বিমানবন্দর সূত্রে খবর, শুধুমাত্র ক্যাট-III- বি গোত্রের বিমানগুলি ইনস্ট্রুমেন্ট ল্যান্ডিং সিস্টেম (আইএলএস)-এর মাধ্যমে নামতে পারছে। ২০০ মিটার থেকে ১৫ মিটার পর্যন্ত দৃশ্যমানতার ক্ষেত্রে বিমান অবতরণের সময় এই আইএলএস প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এখনও পর্যন্ত তিনটি বিমানকে ঘুরিয়ে অন্য বিমানবন্দরে পাঠানো হয়েছে।
ঘন কুয়াশার সঙ্গে যোগ হয়েছে তীব্র ঠান্ডা। আবহাওয়া দফতর থেকে ‘অত্যন্ত খারাপ আবহাওয়া’র সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। শনিবার ভোরে দিল্লির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা লোদি রোডে রেকর্ড হয়েছে ২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওই দিন সফদরজং এলাকায় পারদ নেমেছিল ২.৮ ডিগ্রিতে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, দিল্লি-সহ গোটা উত্তর ভারত জুড়ে এই ঠান্ডা বজায় থাকবে আরও অন্তত দু’দিন। ফুটপাথের বাসিন্দাদের জন্য রাতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে দিল্লি সরকারের পক্ষ থেকে। তার পরেই ‘লাল’ সতর্কতা জারি করে আবহাওয়া দফতর। আবহবিদ্যার পরিভাষায় যাকে বলা হয় ‘এক্সট্রিম ওয়েদার কন্ডিশন’।
কুয়াশার জেরে খালে গাড়ি। ছবি: টুইটার থেকে
এই তীব্র ঠান্ডা এবং কুয়াশার মধ্যেই রবিবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ গ্রেটার নয়ডার ডানকৌর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি গাড়ি খালে পড়ে যায়। ওই গাড়িতে ১১জন ছিলেন। তাঁদের সবাই গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে সবাইকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাঁদের মধ্যে ৬ জনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। বাকি পাঁচ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, কুয়াশার জেরেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন চালক।