পিনারাই বিজয়ন। —ফাইল চিত্র
কেরলের রাজীব গাঁধী সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি (আরজিসিবি)-র দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নামকরণে সঙ্ঘ নেতা এম এস গোলওয়ালকরের নাম থাকা নিয়ে এ বারে আপত্তি জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। গত কালই বিষয়টি নিয়ে তীব্র ভাষায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিশানা করেছিলেন রাজ্যের সিপিএম ও কংগ্রেস নেতারা। এ দিন কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী হর্ষ বর্ধনকে লেখা চিঠিতে বিজয়ন বলেছেন, আরজিসিবি প্রথম সারির গবেষণা কেন্দ্র এবং তা রাজনীতির ঊর্ধ্বে।
গোড়ায় রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পরে এটিকে অধিগ্রহণ করে কেন্দ্র। প্রথম থেকেই বিজ্ঞান গবেষণার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক স্তরের সুনাম কুড়িয়েছে। বিষয়টি চিঠিতে উল্লেখ করে বিজয়ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বলেছেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কোনও ভারতীয় বিজ্ঞানীর নামে সেটির নামকরণ করতে। গত কাল কংগ্রেস এবং সিপিএমও একই দাবি জানিয়ে কেরলের বিখ্যাত ব্যাক্টিরিয়োলজিস্ট ও সমাজ সংস্কারক ডা: পি পালপু-র নামে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করার দাবি তুলেছিল।
গত শুক্রবার কেরলের এই বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানটির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নামকরণ সঙ্ঘ নেতা গোলওয়ালকরের নামে করার কথা ঘোষণা করেছিলেন হর্ষ বর্ধন। তার পরেই বিষয়টি নিয়ে চড়া সুরে আক্রমণ শানিয়ে রাজ্যে ক্ষমতাসীন বাম ও বিরোধী কংগ্রেস একসুরে কেন্দ্রকে নিশানা করে। বাম ও কংগ্রেসের নেতাদের বক্তব্য, আগাগোড়া সাম্প্রদায়িক মানসিকতার সঙ্ঘ নেতা গোলওয়ালকরের নামে ক্যাম্পাসের নামকরণ করে শিক্ষাক্ষেত্রে নিজেদের সাম্প্রদায়িক মনোভাব ফুটিয়ে তুলছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। রাজ্য সিপিএম নেতারা বলেন, সঙ্ঘের এই নেতা প্রকাশ্যেই হিটলারের কাজকর্ম ও নীতির প্রশংসা করতেন। হিটলারের ইহুদি বিদ্বেষের মতোই মতোই প্রবল মুসলিম বিদ্বেষ ছিল এই সঙ্ঘ নেতার মন্ত্র। কংগ্রেস নেতা তথা তিরুঅনন্তপুরমের সাংসদ শশী তারুর বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে গোলওয়ালকরের ‘অবদানে’র প্রসঙ্গ টেনে খোঁচা মেরে ১৯৬৬ সালে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভায় তাঁর একটি বক্তব্য টেনে আনেন। সেই সভায় সঙ্ঘ নেতাটি ধর্মকে শ্রেষ্ঠত্বের বিচারে বিজ্ঞানের উপরে স্থান দেওয়ার কথা বলেছিলেন। বাম-কংগ্রেস নেতাদের কটাক্ষ, যে সঙ্ঘ নেতা ধর্মকে বিজ্ঞানের উপরে জায়গা দেওয়ার কথা বলেন, তাঁর নামে বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামকরণ মোদী সরকার এবং বিজেপির পক্ষেই সম্ভব।