কাফিল খান
আট মাসের লড়াই শেষে জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন তিনি। এ বার আর এক লড়াইয়ের জন্য তৈরি গোরক্ষপুরের ‘বিতর্কিত’ চিকিৎসক কাফিল খান। কেরলে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের পাশে থাকতে অবিলম্বে কোঝিকোড় যাচ্ছেন তিনি। যদিও তাঁর এই সিদ্ধান্তে চিন্তিত পরিবারের সদস্যেরা।
গত সেপ্টেম্বরে গোরক্ষপুরে শিশুমৃত্যুর ঘটনার পর দুর্নীতির অভিযোগে বিআরডি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক কাফিলকে জেলে পাঠিয়েছিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। হাসপাতাল থেকেও ‘সাসপেন্ড’ করা হয়েছিল তাঁকে। চিকিৎসকের দায়িত্ব পালনে এ বার তাই কেরল যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন কাফিল। গত মঙ্গলবার এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর পোস্টকে স্বাগত জানিয়েছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তার পর থেকে চলছে কেরল যাওয়ার প্রস্তুতি। সেই সঙ্গে পরিবারে কান্নাকাটি, বাড়ছে দুশ্চিন্তাও। কারণ, নিপা-য় আক্রান্ত হয়ে কেরলে ইতিমধ্যে মারা গিয়েছেন ১০ জন রোগী এবং লিনি পুতুসেরি নামে এক নার্স।
কাফিলের দাদা আদিল ফোনে বুধবার বলেন, ‘‘এক মাসও হয়নি জেল থেকে ভাই বাড়ি ফিরেছে। এর মধ্যে কেরল যাওয়ার সিদ্ধান্তে স্বভাবতই আমরা দুশ্চিন্তায়।’’ কাফিল নিজেও ফোনে বলছেন, ‘‘আমি যাব শোনার পর থেকে মা কাঁদছেন। স্ত্রীও যেতে বারণ করছেন। ওদের ভয়, আমার সংক্রমণ হয়ে গেলে হয়তো আর বাড়ি ফিরব না। তবে ওঁদের বুঝিয়েছি, চিকিৎসক হিসাবে এটুকু ঝুঁকি তো নিতেই হবে।’’
চিকিৎসক কাফিল অবশ্য মনে করছেন, এনসেফ্যালাইটিসে তাঁর গত চার-পাঁচ বছরের ‘অভিজ্ঞতা’ই কাজে লাগবে কেরলে। তাঁর মতে, উপসর্গ, ‘প্যাটার্ন’-এর দিক থেকে দেখলে নিপার সঙ্গে এনসেফ্যালাইটিসের অনেক মিল রয়েছে। তাই সাসপেনশন ওঠার প্রত্যাশায় বাড়িতে বসে না থেকে নিজের কাজটাই মন দিয়ে করতে
চান তিনি।
তবে কি গোরক্ষপুর হারাতে চলেছে তাঁকে? কাফিল জানাচ্ছেন, আগামী জুলাইয়ে এনসেফ্যালাইটিসের ‘সময়’ শুরুর আগেই নিজের জায়গায় ফিরছেন তিনি। সাসপেনশন প্রত্যাহার না হলে? প্রত্যয়ী চিকিৎসকের জবাব, ‘‘কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে কথা হয়েছে। ওরা এনসেফ্যালাইটিসের চিকিৎসায় হাসপাতাল খুলতে চলেছে। যেখানে বিনামূল্যে গরিবের চিকিৎসা হবে। সেখানে কাজ করব।’’