রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। ফাইল ছবি।
অপরাধ ঘৃণ্য বা গুরুতর না হলে জনপ্রতিনিধিদের পদ খারিজ না করার আর্জি জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল সুপ্রিম কোর্টে। কেরলের এক সমাজকর্মী দেশের শীর্ষ আদালতে এই আর্জি জানিয়ে মামলা করেছেন।
রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ হয়ে যাওয়া নিয়ে যখন দেশের রাজনীতি তোলপাড়, সেই সময় রাহুলের পরিণতির প্রেক্ষিতেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন সমাজকর্মী আভা মুরলীধরন। রাহুল নিজে তাঁর বিরুদ্ধে সুরত আদালতের রায় কিংবা সাংসদ পদ খারিজের বিরুদ্ধে এখনও কোনও পদক্ষেপ করেননি। উচ্চতর আদালতে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদনও জানাননি। তার আগেই আইনের সংশোধন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে।
ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-র ৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শুক্রবার রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। আইন অনুযায়ী, যে কোনও সাংসদ বা বিধায়ক কোনও নির্দিষ্ট মামলায় আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে এবং তাঁর দুই বা ততোধিক বছরের সাজা হলে তৎক্ষণাৎ সাংসদ বা বিধায়ক পদ খারিজ হয়ে যায়।
মামলাকারীর বক্তব্য, জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-এর ৮ নম্বর অনুচ্ছেদে সংশোধন প্রয়োজন। জনগণ দ্বারা নির্বাচিত কোনও প্রতিনিধির সাংসদ বা বিধায়ক পদ এ ভাবে খারিজ করে দেওয়া স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতার পরিচায়ক। আদালতে এই আইনকে সংবিধানবিরোধী হিসাবে চিহ্নিত করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। মামলাকারী এ-ও জানিয়েছেন, যে কোনও অপরাধেই জনপ্রতিনিধির পদ খারিজ করে দেওয়া আসলে ব্যক্তিস্বাধীনতার পরিপন্থী।
মামলাকারীর মতে, এ ক্ষেত্রে অপরাধের গুরুত্ব বিচার করে রায় দেওয়া প্রয়োজন। গুরুতর, ঘৃণ্য অপরাধের ক্ষেত্রে সাংসদ বা বিধায়ক পদ অবিলম্বে খারিজের আইন প্রযুক্ত হতেই পারে। কিন্তু তা না হলে, ক্ষমতার অপব্যবহারের নিদর্শন তৈরি হয়। জনপ্রতিনিধি সব সময়েই জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন, তাঁদের কথা তুলে ধরেন। এ ভাবে যে কোনও অপরাধে ২ বছরের সাজা দিয়ে সেই প্রতিনিধির কণ্ঠরোধ গণতন্ত্রের জন্য অস্বস্তি বয়ে আনতে পারে বলেও মনে করেছেন মামলাকারী।
‘মোদী’ পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের কারণে বৃহস্পতিবার রাহুলকে ২ বছরের জেলের সাজা শোনায় গুজরাতের সুরাত জেলা আদালত। তারই ভিত্তিতে ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-এর ৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শুক্রবার রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করে দেওয়া হয়। কেরলের ওয়েনাড়ের সাংসদ ছিলেন রাহুল। তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা এবং সাংসদ পদ খারিজ করার নেপথ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলে মত অনেকের।