আতঙ্কে দৌড়াদৌড়ি করতে গিয়ে পদপিষ্ট মুম্বইয়ের এলফিনস্টোন স্টেশনে। এই সেই ফুট ওভার ব্রিজ।— ফাইল ছবি।
ছিল ‘ফুল’, হল ‘পুল’। একটা শব্দের এ দিক ও দিক। আর তা-ই কেড়ে নিল ২৯টি প্রাণ। শোনার একটুখানি ভুলেই ছড়ায় গুজব। আর তার জেরেই গত শুক্রবার মুম্বইয়ের এলফিনস্টোন রোড স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ২৯ জনের। জখম হন আরও ৩৯ জন।
ঘটনার তদন্তে তৈরি হয়েছিল তিন জনের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল। সোমবার দুর্ঘটনায় আহত বিশ্বকর্মা নামে এক ছাত্রী ওই তদন্তকারী দলের কাছে নিজের বয়ান জমা দেন। বিশ্বকর্মার বয়ান ও সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, বোঝার ভুলেই গুজব রটে। আর তার জেরেই দুর্ঘটনা।
আরও পড়ুন: শীর্ষ ব্যাঙ্ক ছাঁটল বৃদ্ধির পূর্বাভাস
শুক্রবারের সকাল স্টেশনে তখন নিত্যযাত্রীদের ব্যস্ততা। কয়েক দিন ধরেই মুম্বইয়ে টানা বৃষ্টি চলছিল। তার মধ্যেই স্টেশনে নেমে হাজার হাজার যাত্রী পারেলে যাওয়ার জন্য ছুটছিলেন ফুটব্রিজের দিকে। বৃষ্টি থেকে মাথা বাঁচাতে ফুটব্রিজের উপরেই আশ্রয় নিয়েছিলেন অনেকে। তার মধ্যেই চলছিল যাত্রীদের যাতায়াত।
সেই সময়েই ঘটে বিপত্তি। তদন্তকারীদের ১৯ বছরের বিশ্বকর্মা জানান, বৃষ্টিতে ভিজে পিচ্ছিল হয়েছিল ফুটব্রিজ। এক ফুলওয়ালা কোনও ভাবে পা পিছলে সিঁড়িতে পড়ে যান। হাত থেকে ফুল পড়ে যাওয়ায় তিনি ‘ফুল গির গ্যয়া’ বলে আর্তনাদ করে উঠেছিলেন। আর সেটা শুনেই অনেকে ভেবে নিয়েছিলেন ‘পুল গির গ্যয়া’, অর্থাৎ কিনা ব্রিজ ভেঙে গিয়েছে। আর তার পরেই আতঙ্কে সবাই হুটোপাটি করে নামার চেষ্টা করতে থাকেন। পড়েও যান অনেকে। তাঁদের উপর দিয়েই চলতে থাকে পালানোর চেষ্টা।
তবে শুধু গুজবের জন্যই দুর্ঘটনা, তা মানতে নারাজ যাত্রীদের একাংশ। ওই জীর্ণ ব্রিজ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ জানিয়ে আসছেন যাত্রীরা। তাঁদের দাবি, ব্রিজের অবস্থা এতটাই খারাপ যে নীচ দিয়ে ট্রেন গেলে কাঁপতে থাকে সেটি। বৃষ্টিতে পিছল ব্রিজের সরু সিড়ি বেয়ে ওঠানামা করাও ঝুঁকির। ভিড় সামলানোরও কোনও ব্যবস্থাও নেই ওই ব্রিজটিতে।