ফাইল চিত্র।
স্পিকারের কাছে দলত্যাগ বিরোধী আইনে দলবদলু নেতাদের বিধায়ক পদ খারিজ করার আর্জি জমা পড়ে। কিন্তু বিধানসভার স্পিকার বছরের পর বছর কোনও সিদ্ধান্ত না নিয়ে বসে থাকেন বলে পশ্চিমবঙ্গ-সহ বহু রাজ্যের বিরোধীদের অভিযোগ।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্দেশিকা তৈরির আর্জি নিয়ে এ বার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জমা পড়ল। প্রাথমিক ভাবে আর্জি শুনে প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা আজ মন্তব্য করেছেন, ‘‘আমরা কী ভাবে আইন তৈরি করব? এটা তো সংসদের বিষয়।’’ তবে প্রধান বিচারপতি নিজেই দু’সপ্তাহ পরে কংগ্রেসের রিসার্চ সেলের সদস্য রণজিৎ মুখোপাধ্যায়ের দায়ের করা এই মামলা শুনবেন বলে জানিয়েছেন। ২০১৯-এ বিচারপতি রমণাই কর্নাটকের দলত্যাগী বিধায়কদের সদস্যপদ খারিজ করে দেওয়ার মামলায় বলেছিলেন, সংবিধানের দশম তফশিল অনুযায়ী স্পিকারের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিতে সংসদই আইন তৈরি করতে পারে। স্পিকারদের মধ্যে দলীয় রাজনীতিতে আটকে গিয়ে, নিরপেক্ষ ভাবে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন না করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সংসদের বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত। প্রধান বিচারপতি আজ মামলাকারীর আইনজীবীদের ওই রায় খতিয়ে দেখতে বলেন। আইনজীবী অভিষেক জেবরাজ বলেন, ‘‘স্পিকাররা সদস্যপদ খারিজের আবেদনে সিদ্ধান্ত না নিয়ে বসে রয়েছেন। আমাদের আর্জি হল, নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হোক।’’
পশ্চিমবঙ্গে গত দু’টি বিধানসভাতেই কংগ্রেস ও সিপিএমের টিকিটে জিতে এসে তৃণমূলে যোগ দেওয়া একাধিক বিধায়কের সদস্যপদ খারিজের জন্য স্পিকারের কাছে আবেদন জমা পড়েছে। স্পিকারের সামনে একাধিক বার শুনানি হলেও কোনও ক্ষেত্রেই সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বার মুকুল রায় বিজেপির টিকিটে জিতে আসার পরে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার তাঁর সদস্যপদ খারিজের জন্যও স্পিকারের কাছে আর্জি জমা পড়েছে। ফলে দলত্যাগ বিরোধী আইন নতুন করে চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। রণজিতের যুক্তি, তিনি শুধু পশ্চিমবঙ্গের ঘটনার জন্য এই মামলা করেননি। সার্বিক ভাবে স্পিকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য যদি কোনও নির্দেশিকা না থাকে, তবে ইচ্ছে মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে। এক দলের টিকিটে
জিতে এসে অন্য দলে যোগ দিয়েও যদি কেউ বিধায়ক থেকে যান, তা হলে মানুষের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার উপরেই আস্থা উঠে যাবে।