National

নোট বিভ্রাটে হেনস্থার ছবি দিকে দিকে

সমস্যার শিকার হচ্ছেন আরও অসংখ্য মানুষ। কোথাও পেট্রোল নিতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন মানুষ, তো কোথাও বাজারে গিয়ে। বিভিন্ন রাস্তায় টোল দিতে গিয়েও সমস্যায় পড়ছেন মানুষ। সবাই চাইছেন এটিএম এবং ব্যাঙ্ক পরিষেবা চালু হওয়ার আগে পর্যন্ত ১০০ টাকার নোট যতটা সম্ভব বাঁচিয়ে রাখতে। তাই গোল বাঁধছে সর্বত্র।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৬ ১২:০৪
Share:

১০০০ টাকার নোট নেওয়া হচ্ছে না সরকারি হাসপাতালের ফোর প্রাইস শপেই। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।

দৃশ্য ১: কসবার অমিতাভবাবু গিয়েছেন রাজস্থান। গতকাল প্রচুর কেনাকাটা করে টাকা যখন প্রায় শেষ, তখনই জানতে পারলেন ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিলের খবর। দু’দিন পরে বাড়ি ফেরার টিকিট কাটা। সঙ্গে যে মাত্র একটিই একশো টাকার নোট! তড়িঘড়ি ছুটলেন এটিএম। ঘণ্টাখানেক লাইন দিয়ে যখন প্রায় পৌঁছলেন এটিমের দরজার কাছে, শুনলেন, ১০০ টাকার নোট শেষ। এ বার উপায়? বাধ্য হয়ে এক দালালের কাছে ২০ হাজারের সোনার আংটি ১০ হাজারে বেচলেন। পেলেন মহার্ঘ্য ১০০ টাকার নোট। হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন অমিতাভ বাবু।

Advertisement

দৃশ্য ২: ১১ নভেম্বর পর্যন্ত ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট যে কোনও হাসপাতালে চলবে বলে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। কিন্তু ঠিক এর বিপরীত চিত্রটা দেখা গেল বারুইপুরের সরকারি হাসপাতালে। খাস সরকারি হাসপাতালের ফেয়ার প্রাইস শপেই ১০০ টাকার উপরের কোনও নোট নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন রোগীর আত্মীয়রা। ফলে চরম সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা।

দৃশ্য ৩: সরকারের নির্দেশ ছিল ট্রেন এবং বাসের টিকিট কেনা যাবে ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট দিয়ে। সেই মতো ট্রেনের টিকিট কাটতে গিয়ে ৫০০ টাকার নোট দিয়েছিলেন সোমনাথবাবু। কিন্তু কাউন্টারের কর্মীর দাবি, সকাল থেকে একাধিক ৫০০ টাকার নোট তিনি নিয়েছেন। আর খুচরো দেওয়া সম্ভব নয়।

Advertisement

অমিতাভবাবুরা একা নন। এই রকমই সমস্যার শিকার হচ্ছেন আরও অসংখ্য মানুষ। কোথাও পেট্রোল নিতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন মানুষ, তো কোথাও বাজারে গিয়ে। বিভিন্ন রাস্তায় টোল দিতে গিয়েও সমস্যায় পড়ছেন মানুষ। সবাই চাইছেন এটিএম এবং ব্যাঙ্ক পরিষেবা চালু হওয়ার আগে পর্যন্ত ১০০ টাকার নোট যতটা সম্ভব বাঁচিয়ে রাখতে। তাই গোল বাঁধছে সর্বত্র।


টিকিট কাউন্টারে লম্বা লাইন। ব্যারাকপুরে সজল চট্টোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

তবে এর বিপরীত ছবিও দেখা গিয়েছ বিভিন্ন জায়গায়। বিভিন্ন জায়গায় এখনও ৫০০ বা ১০০০ টাকার নোট ভাঙিয়ে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের মতে, “ব্যাঙ্ক খুললে আমরা টাকা পাল্টে নেব। এখন যদি টাকা না নিই, তা হলে সাধারণ ক্রেতা মুশকিলে পড়বেন।” তবে বেশির ভাগ জায়গায় পুরো টাকার জিনিস কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বেশ জটিল। ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের পরে আমজনতার এমন নাজেহাল দশা দিন কয়েক চলবে বলে মেনে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। খোদ প্রধানমন্ত্রীই তাঁর ভাষণে সে কথা বলেছেন। মোদীর পরে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর উর্জিত পটেল বাজারে নগদের অভাব হবে না বলে দাবি করলেও কেন্দ্রের অর্থ বিষয়ক সচিব শক্তিকান্ত দাস তাঁর পাশে বসেই বলেছেন, আগামী ১৫ দিন সাধারণ মানুষকে খানিকটা ভুগতে হবে। তবে জাল টাকার মোকাবিলায় এই পদক্ষেপ কার্যকরী হবে বলেই অর্থনীতিবিদদের আশা।

আরও পড়ুন:

৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বদল নিয়ে চিন্তা? কী ভাবে বদলাবেন জেনে নিন
পাঁচশো, হাজার অচল, চমকে দিয়ে হানা জাল ও কালো টাকায়

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement