প্রতীকী ছবি।
পবন জল্লাদ বলছেন, তিনি তৈরি। যদি মেরঠের জেল কর্তৃপক্ষ তাঁকে তিহাড় জেলে রওনা হতে বলেন, ২৪ ঘণ্টার নোটিসে পৌঁছে যাবেন। যাবেন নির্ভয়ার চার ধর্ষককে ফাঁসি দিতে।
পবনের বয়স ৫৫। তিন প্রজন্মের ফাঁসুড়ে তাঁরা। পবনের ঠাকুর্দা কাল্লু জল্লাদ ফাঁসি দিয়েছিলেন ইন্দিরা গাঁধীর দুই খুনি-ষড়যন্ত্রীকে, ধর্ষক-ধুনি রঙ্গা-বিল্লাকে। পাঁচটি ফাঁসিতে ঠাকুর্দার সহকারী ছিলেন পবন। তাঁর বাবা বাব্বু জল্লাদও ছিলেন ফাঁসুড়ে।
উত্তরপ্রদেশের অতিরিক্ত এডিজি (কারা) আনন্দ কুমার বলেন, ‘‘তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষ অল্প সময়ের মধ্যে ফাঁসুড়ে পাঠাতে বলেছেন আমাদের। উত্তরপ্রদেশে ফাঁসুড়ে আছেন দু’জন। যিনি লখনউয়ে আছেন, তিনি অসুস্থ। তাই মেরঠে যিনি আছেন, তাঁকে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: সিএবি-র জের! জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সফর স্থগিত
অর্থাৎ পবন। তিনি বলছেন, কাকে ফাঁসি দিতে হবে জানেন না। তবে নির্ভয়া মামলা নিয়ে চর্চা হচ্ছে বলে আঁচ করছেন, সেখানেই তাঁর ডাক পড়তে পারে। এবং বলেই দিচ্ছেন, কোনও চাপের মধ্যে তিনি নেই। কারণ যাদের ফাঁসি দিতে হতে পারে, তারা জঘন্যতম অপরাধ করেছে।
তিহাড় সূত্র জানাচ্ছে, চার ধর্ষকই মানসিক অবসাদে ভুগছে। খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে তারা। নিজেদের কোনও ক্ষতি যাতে তারা করে না-ফেলে, সে জন্য চার-পাঁচ জন বিশেষ রক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। তিহাড় জেলের ডিজি সন্দীপ গয়াল আজ কয়েক জন উচ্চপদস্থ কর্তাকে নিয়ে ৩ নম্বর জেল পরিদর্শন করেন। ফাঁসির প্রস্তুতি চলছে সেখানে। সূত্রের খবর, সেই প্রস্তুতিতে কর্তারা সন্তুষ্ট।
চার ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড অবিলম্বে কার্যকর করার আর্জি নিয়ে আদালতে গিয়েছিলেন নির্ভয়ার মা-বাবা। সেই আবেদন আগামী বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর শুনবে দিল্লির ওই আদালত। অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সতীশকুমার অরোরা বলেন, ‘‘দোষীদের মধ্যে এক জনের (অক্ষয় সিংহ ঠাকুর) রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি এখনও শোনেনি সর্বোচ্চ আদালত। ১৭ ডিসেম্বর সেই শুনানি হবে। অন্তত ওই দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে।’’
ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে আজ আদালতে হাজির করানো হয় আসামি অক্ষয়, মুকেশ, পবন গুপ্ত ও বিনয় শর্মাকে। এর মধ্যে মুকেশের আইনজীবী আদালতে ছিলেন না। আদালত তার জন্য আইনজীবী নিয়োগ করে।
দোষীদের মৃত্যুদণ্ড দ্রুত কার্যকর করার জন্য সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অনলাইনে আবেদন জানান নির্ভয়ার মা আশা দেবী। বলেন, ‘‘সাত বছর ধরে বিচারের অপেক্ষা করতে করতে আমি ক্লান্ত।’’ তাঁর অভিযোগ, দোষীরা ইচ্ছে করে বিচার প্রক্রিয়ায় দেরি করাচ্ছে। ১৬ ডিসেম্বরের আগেই ফাঁসি হওয়া উচিত। দ্রুত ফাঁসির পক্ষে সওয়াল করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালও।