পতঞ্জলির হাজারো পণ্যের মধ্যে অন্যতম দাড়ি কামানোর ক্রিম। কিন্তু বলার সময় তার কথাই মনে থাকে না রামদেবের!
আজ রাজধানীতে বার্ষিক সাংবাদিক সম্মেলনে হাসতে হাসতে এ কথা জানালেন রামদেব নিজেই। বললেন, ‘‘মাথায় যার চুল নেই, তার কি মাথার তেলের বিজ্ঞাপন করা উচিত? আমারও ঠিক সেই কারণেই আমাদের তৈরি শেভিং ক্রিমের কথা মনে থাকে না!’’ তবে এখানেই না থেমে তাঁদের ক্রিমের রহস্যটাও ফাঁস করে দিয়ে বলেন, ‘‘দাড়ি কামানোর সময় নারকেল তেল এবং অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মুখে মাখুন। দেখবেন বয়স থেমে রয়েছে বিশ বছরে। আপনার স্ত্রী আরও ভালবাসবেন আপনাকে!’’
সদ্য সমাপ্ত আর্থিক বছরে দশ হাজার পাঁচশো একষট্টি কোটি টাকা টার্নওভারের কথা ঘোষণা করে আজ ফুরফুরে মেজাজে রামদেব। আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। বলেছেন, ‘‘নতুন বছরেও আমরা ইতিহাস গড়তে চলেছি। যখন সমস্ত বিদেশি ব্র্যান্ডগুলি ধুঁকছে, তখন আমাদের বৃদ্ধি ১০০ শতাংশ।’’ আগামী আর্থিক বছরে তাঁর পতঞ্জলির ব্যবসার পরিমাণ দ্বিগুণ বেড়ে কুড়ি হাজার কোটি টাকা ছোঁবে বলেও এ দিন আশা প্রকাশ করেছেন রামদেব। নয়ডা, তেজপুর, নাগপুর, ইন্দোর, অন্ধ্রপ্রদেশ— দেশের এই পাঁচটি প্রান্তে বিরাট মাপের পণ্য উৎপাদন কেন্দ্র গড়তে চলেছে তাঁর সংস্থা।
আজ বেশ কিছু নতুন পণ্য বাজারে আনার কথা ঘোষণা করে রামদেব বলেন, ‘‘আগে অন্যান্য প্রদেশের লোক পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তর ভারতকে বোকা ভাবত। তারা সর্ষের তেল খায় বলে। কিন্তু আজ দেখা যাচ্ছে, এটাই সবচেয়ে স্বাস্থ্যসম্মত।’’
তাঁর এই পতঞ্জলি সাম্রাজ্যের মূল উদ্দেশ্য, বিদেশি বহুজাতিক সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করে ভারতকে ‘মুক্তি’ দেওয়া— এমনটাই দাবি রামদেবের। কোনও ভারতীয় সংস্থার এই উল্কার গতির উত্থানের কথা বলতে গিয়েই এ দিন চিন সম্পর্কে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। বললেন, ‘‘চিন তাদের পণ্য আমাদের বাজারে ডাঁই করছে। আমরাই প্রথম এর বিরোধিতা করেছি। মানুষকে আজও বলছি, চিনের দ্রব্য বয়কট করুন। চিন আমাদের বন্ধু দেশ নয়। তাদের মুনাফা বাড়িয়ে কী লাভ।’’
গতকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘রাজর্ষি’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। আজ তারই প্রতিধ্বনি করে জানালেন, ভারতের এই প্রধানমন্ত্রী ঈশ্বরপ্রদত্ত। তাঁর কথায়, ‘‘মোদীও আয়ুর্বেদশাস্ত্রকে নতুন করে ভারতে ফিরিয়ে আনার কথা ভাবছিলেন। আমরা শুধু পণ্য উৎপাদন করেই ক্ষান্ত নই। প্রাচীন পাণ্ডুলিপি উদ্ধার করে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন ২০০ জন গবেষক-বিজ্ঞানী। নতুন নতুন ভেষজপণ্য উৎপাদন করার জন্য।’’