পুরী স্টেশনে সাত নম্বর প্ল্যাটফর্ম এবং ট্রেনের মধ্যে দূরত্ব এতটাই! উঠতে হয় সিঁড়ি দিয়ে। —নিজস্ব চিত্র।
পুণ্যক্ষেত্র হিসাবে তো বটেই, বেড়ানোর জায়গা হিসাবেও বাঙালির প্রিয় পুরী। প্রতি বছরই পুণ্যার্জন এবং সমুদ্রদর্শনের জন্য বহু মানুষ ওড়িশার এই সৈকত শহরে আসেন। তাঁদের মধ্যে প্রচুর বয়স্ক মানুষও থাকেন। রেলপথে আসতে হলে পুরী স্টেশনে নেমে কিছুটা রাস্তা সড়কপথে যান পর্যটকেরা। কিন্তু পুরী স্টেশনের দু’টি প্ল্যাটফর্ম এতটাই নিচু যে, যাত্রীদের ট্রেন থেকে উঠতে-নামতে ভীষণ অসুবিধার মুখে পড়তে হচ্ছে।
যাত্রীদের বক্তব্য, পুরী স্টেশনের সাত এবং আট নম্বর প্ল্যাটফর্ম রেললাইনের সমতলে। একেবারেই নিচু। অথচ সারা দিন স্টেশনের ওই দু’টি প্ল্যাটফর্মে ঢোকে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ দূরপাল্লার ট্রেন। কিছু ট্রেন ছাড়েও ওই দু’টি প্ল্যাটফর্ম থেকে। রেলকে এই বিষয়ে অভিযোগ জানালেও কাজের কাজ কিছু হয়নি বলে দাবি করেছেন যাত্রীদের একাংশ।
সত্তরোর্ধ্ব এক রেলযাত্রীর কথায়, “হাঁটুর ব্যথায় কাবু এমনিতেই। পরিবারের সঙ্গে জগন্নাথ দর্শনে এসেছিলাম। ট্রেন থেকে প্ল্যাটফর্মে নামতে গিয়ে এমন সমস্যায় পড়েছিলাম যে, মনে হচ্ছিল আর বুঝি যাওয়া হবে না।” স্থানীয়দের অবশ্য বক্তব্য, কেবল বয়স্কেরাই নন, যা পরিস্থিতি তাতে যে কোনও বয়সের যাত্রীরই ট্রেন থেকে নামতে কিংবা উঠতে গিয়ে সমস্যায় পড়বেন।
দূরপাল্লার ট্রেনের তিন থাকের লোহার সিঁড়ি বেয়ে আপাতত নামতে হচ্ছে যাত্রীদের। কিন্তু অনেকের পক্ষে, বিশেষত বয়স্ক এবং মহিলাদের পক্ষে বিষয়টি যে ঝক্কির, তা মানছেন অনেকেই। পুরী স্টেশন রেলের ইস্ট কোস্ট বা পূর্ব-উপকূল জ়োনের অন্তর্ভুক্ত। এই বিষয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে ইস্ট কোস্ট রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বিশ্বজিৎ সাহুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সমস্যার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, “রেলের অমৃত ভারত প্রকল্পের আওতায় খুব দ্রুতই স্টেশন সংস্কারের কাজ শুরু হবে। তখন প্ল্যাটফর্মগুলিকে উঁচু করা হবে। যাত্রী পরিষেবা আরও মসৃণ করতে রেল কাজ চালাচ্ছে।” আপাতত ওই দু’টি প্ল্যাটফর্ম বাদ দিয়ে অন্য প্ল্যাটফর্মগুলিতে দূরপাল্লার ট্রেন ঢোকানো যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।