ণ্যের অবাধ পরিবহণের জন্যই ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডরের পরিকল্পনা ও নির্মাণ। প্রতীকী ছবি।
প্রধানত হরেক কিসিমের পণ্যের অবাধ পরিবহণের জন্যই ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডরের পরিকল্পনা ও নির্মাণ। তবে বড়সড় দুর্ঘটনা বা গুরুত্বপূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণের মতো বিশেষ পরিস্থিতিতে চলাচল অব্যাহত রাখতে সেই করিডরে যাত্রী-ট্রেন চালানোর ছাড়পত্র দিয়েছে রেলওয়ে বোর্ড।
যাত্রী পরিবহণের জন্য নতুন লাইন চালু করার ক্ষেত্রে রেলের ২০০০ সালের বিধির ২৪ নম্বর ধারার শর্ত পূরণসাপেক্ষে ওই ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে বলে রেল সূত্রের খবর। ওই নিয়মবিধিতে ভয়াবহ দুর্ঘটনা বা গুরুত্বপূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণের কাজের সময় বিকল্প পথে যাত্রিবাহী ট্রেন ঘুরিয়ে দেওয়ার সংস্থান রয়েছে।
রেলের আয়ের অধিকাংশই আসে পণ্য পরিবহণ থেকে। অথচ গত কয়েক দশকে সারা দেশে মোট পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে রেলের অংশ সমানে কমেছে। স্বাধীনতার সময় সারা দেশের মোট অভ্যন্তরীণ পণ্যের প্রায় ৮০ শতাংশ বহন করত রেল। বছর কয়েক আগে সেটা কমে ১৮ শতাংশে এসে ঠেকে। তবে গত দু’বছরে সেই পরিস্থিতির কিছুটা উন্নত হওয়ায় রেলে পণ্য পরিবহণ ২৬-২৭ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।
পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে রেলের গুরুত্ব হ্রাস ঠেকাতেই মালগাড়ি চলাচল বা পণ্য পরিবহণের জন্য পৃথক করিডর তৈরির চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছিল। উদ্দেশ্য, রেলকে আর্থিক ক্ষতি থেকে রক্ষা করার সঙ্গে সঙ্গে পণ্য বহনের সার্বিক খরচ কমিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা ঘোরানো।
যাত্রিবাহী ট্রেনকে পথ ছেড়ে দিতে গিয়ে আগে প্রায়শই মালগাড়িকে দাঁড় করিয়ে রাখা হত। এতে পণ্য পরিবহণে সময় তো বেশি লাগাতই, বাড়ত আর্থিক ক্ষতির বহরও। দীর্ঘ কাল ধরে এমন নানা কারণে পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে ভরসা হারাচ্ছিল রেল। সেই জায়গা ফিরে পেতেই বিশেষ করিডরে প্রায় যাত্রিবাহী ট্রেনের গতিতে মালগাড়ি ছোটানোর পরিকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে।
সেখানে এ ভাবে বিশেষ পরিস্থিতিতে যাত্রিবাহী ট্রেন চালানোর অনুমতি কেন, সেই প্রশ্ন উঠছে। রেল সূত্রের খবর, ভারতে চিরকালই যাত্রিবাহী ট্রেনকে পণ্যবাহী ট্রেনের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। সেই জন্যই কোনও দুর্ঘটনা বা জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের সময় পণ্যবাহী করিডর দিয়ে যাতে যাত্রিবাহী ট্রেন ঘুরিয়ে দেওয়া যায়, তার ব্যবস্থা রাখতেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার জন্য উত্তর, দক্ষিণ এবং পূর্ব-পশ্চিম করিডরের যে-সব অংশ মূল রেললাইনের সমান্তরালে রয়েছে, সেখানে বিশেষ ভাবে সমন্বয় রক্ষা করে চলার পরিকল্পনা হচ্ছে।
রেলকর্তাদের দাবি, নতুন নির্দেশের ফলে ট্রেন বেলাইন হওয়ার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সার্বিক ট্রেন চলাচলের উপরে তার কম প্রভাব পড়বে। যাত্রিবাহী ট্রেন পণ্যবাহী মালগাড়ির করিডর দিয়ে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি
কিছু ক্ষেত্রে যাত্রিবাহী ট্রেনের লাইনে মালগাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়ারও সুযোগ থাকবে। এই প্রসঙ্গে এক রেলকর্তা বলেন, ‘‘বিপদের সময়ে তৈরি-পরিকাঠামো ব্যবহারের সুযোগ খোলা রাখতেই এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’