—প্রতীকী ছবি।
বিরোধী নেতাদের ফোনে হ্যাক-বার্তা যাওয়া নিয়ে বিতর্কের আবহেই এ বার ফোন প্রস্তুতকারক সংস্থা অ্যাপলের প্রতিনিধিকে ডাকার ভাবনাচিন্তা শুরু করল তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত সংসদের স্ট্যান্ডিং কমিটি। সংবাদ সংস্থা এএনআই কেন্দ্রীয় সচিবালয়ের এক আধিকারিকের মন্তব্য উদ্ধৃত করে এই কথা জানিয়েছে।
ওই আধিকারিক এএনআই-কে বলেন, “সংসদের স্ট্যান্ডিং কমিটি পরবর্তী বৈঠকে অ্যাপলের প্রতিনিধিকে ডেকে পাঠানোর কথা ভাবছে। ওই বৈঠকে সাম্প্রতিক ‘রাষ্ট্র পরিচালিত হ্যাকার’ হামলা নিয়ে অ্যাপলের বক্তব্য শোনা হবে।” যদিও এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও কিছু জানা যায়নি। মঙ্গলবারেই অবশ্য দেশের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অ্যাপলকে তদন্তপ্রক্রিয়ায় অংশ নিতে বলেছিলেন।
মঙ্গলবার প্রথমে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র আমেরিকার সংস্থা অ্যাপলের মেসেজ এবং ইমেল নোটিফিকেশনের স্ক্রিনশট এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে দাবি করেছিলেন যে, তাঁর আইফোন কেন্দ্রীয় সরকার হ্যাক করতে চাইছে বলে সতর্কবার্তা এসেছে। মহুয়ার সেই অভিযোগ ঘিরে দিনভর সরগরম থাকে জাতীয় রাজনীতি। কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর, শিবসেনার প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীও অ্যাপল সংস্থা থেকে পাওয়া ‘সতর্কবার্তার’ কথা জানান। অভিযোগ আসে আপ সাংসদ রাঘব চড্ডার তরফেও। এমনকী, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও সাংবাদিক বৈঠক করে অভিযোগ করেন যে, প্রধানমন্ত্রী মোদীর ‘ঘনিষ্ঠ’ শিল্পপতি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যে সাংসদেরা সরব, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্ত্রক তাঁদের ফোন হ্যাক করছে।
শশী, প্রিয়ঙ্কা, রাঘবের পাশাপাশি, সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব, সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এবং কংগ্রেস নেতা পবন খেরাও অ্যাপলের সতর্কবার্তা পেয়েছেন বলে জানা যায়। অ্যাপলের তরফে পাঠানো সতর্কবার্তায় বলা হয়, ‘‘রাষ্ট্রপরিচালিত হ্যাকারেরা আপনাকে ‘টার্গেট’ করেছে। অ্যাপল আইডির সঙ্গে আপনার যে আইফোনটি যুক্ত করা আছে, সেটি হ্যাক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনি কে, কী করেন— সম্ভবত এ সব দেখে হ্যাকারেরা নির্দিষ্ট করে আপনাকেই ‘টার্গেট’ করেছে।’’ অ্যাপল থেকে আরও বলা হয়, ‘‘এই রাষ্ট্র পরিচালিত হ্যাকারেরা যদি আপনার আইফোনে এক বার ঢুকতে পারে, আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, কথোপকথন এমনকি ক্যামেরা এবং মাইক্রোফোনও ওদের হাতে চলে যাবে। তাই দয়া করে এই সতর্কবার্তাকে উপেক্ষা করবেন না।’’
বিরোধীদের আক্রমণের জবাবে কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব পাল্টা আক্রমণ করে বলেন, ‘‘বিরোধীরা সমালোচনার অজুহাত খুঁজতে থাকেন। কেন্দ্রকে আক্রমণ করার কোনও বড় কারণ না পেয়ে এখন হ্যাকিং নিয়ে সুর চড়াচ্ছেন তাঁরা।’’ তবে একই সঙ্গে মন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘‘অ্যাপলের ওই সতর্কবার্তা শুধু ভারতে নয়, আরও অন্তত ১৫০টি দেশে গিয়েছে। কেন ওই সতর্কবার্তা এল, তা জানতে বিশদ তদন্তের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।’’ অন্য দিকে অ্যাপলের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, এই বিষয়ে আর বেশি কিছু তথ্য দিলে তা ভবিষ্যতে সুবিধা করে দেবে ‘রাষ্ট্র পরিচালিত হ্যাকারদেরই’।