সন্ত্রাসের দায়মুক্ত হাফিজ, উদ্বেগ ভারতের

জানুয়ারি মাসে মুম্বই হামলার মূল চক্রী সইদ ও তার চার সঙ্গীকে সন্ত্রাস-বিরোধী আইনে গৃহবন্দি করে পাকিস্তান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপেই ইসলামাবাদ এই পদক্ষেপ করেছিল বলে ধারণা কূটনীতিকদের।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৪৫
Share:

হাফিজ সইদ

জঙ্গি নেতা হাফিজ সইদ ও তার জামাত উদ দাওয়ার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস-বিরোধী আইনে অভিযোগ তুলে নিল পাকিস্তান। মুম্বই হামলার মূল চক্রী সইদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান ফের অবস্থান নরম করছে বলে ধারণা দিল্লির। তাদের মতে, সন্ত্রাসে মদত নিয়ে পাকিস্তানের মনোভাবে যে আদৌ কোনও পরিবর্তন আসেনি এই ঘটনাই তার প্রমাণ।

Advertisement

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপেই পাকিস্তান সইদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছিল বলে মনে করেন কূটনীতিকেরা। তাতে স্বস্তি পেয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। গতকাল সেই ট্রাম্পই পাকিস্তানের প্রশংসা করে টুইট করায় পরিস্থিতি কিছুটা বদলে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সন্ত্রাস প্রশ্নে ভারত আমেরিকাকে আর কতটা পাশে পাবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠতা নিয়ে মোদীকে কটাক্ষ করেছেন রাহুল গাঁধী।

জানুয়ারি মাসে মুম্বই হামলার মূল চক্রী সইদ ও তার চার সঙ্গীকে সন্ত্রাস-বিরোধী আইনে গৃহবন্দি করে পাকিস্তান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপেই ইসলামাবাদ এই পদক্ষেপ করেছিল বলে ধারণা কূটনীতিকদের। পরে দু’বার তাদের গৃহবন্দি দশার মেয়াদ বাড়ানো হয়।

Advertisement

পাক সরকারের বিরুদ্ধে লাহৌর হাইকোর্টে যায় সইদ। গত সপ্তাহে হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, চার্জশিট না দিলে অনির্দিষ্ট কাল সইদকে আটক রাখা সম্ভব নয়। গতকাল পাক পঞ্জাব প্রদেশের স্বরাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে‌, সন্ত্রাস-বিরোধী আইনে সইদ ও তার চার সঙ্গীর আটক থাকার মেয়াদ বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।

আরও পড়ুন:‘বাবা আমার ঘর কোথায়? বলতে পারিনি’

পঞ্জাব প্রাদেশিক সরকারের আধিকারিকেরা অবশ্য জানিয়েছেন, সইদের বিরুদ্ধে অবস্থান আদৌ নরম করা হয়নি। সেপ্টেম্বর মাসে জন সুরক্ষা অর্ডিন্যান্সে সইদ ও তার সঙ্গীদের আটক থাকার মেয়াদ বাড়়ানো হয়েছিল। তাই আর সন্ত্রাস-বিরোধী আইনে পদক্ষেপ করার প্রয়োজন নেই।

পাকিস্তানের এই ব্যাখ্যা নিয়ে অবশ্য সন্দিহান ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক। মন্ত্রক সূত্রের মতে, গতকাল ট্রাম্প পাকিস্তানের প্রশংসা করায় কিছুটা স্বস্তিতে ইসলামাবাদ। ফলে সইদের উপরেও চাপ ধীরে ধীরে কমাচ্ছে তারা। সইদের বিরুদ্ধে ভারত দফায় দফায় সাক্ষ্যপ্রমাণ দিলেও পাকিস্তান তা মানেনি। বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘সইদ রাষ্ট্রপুঞ্জ ও আমেরিকার আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদীর তালিকায় রয়েছে। ফলে তাকে সন্ত্রাস-বিরোধী আইন থেকে মুক্তি দেওয়ার কোনও অর্থই হতে পারে না।’’

সাম্প্রতিক আফগানিস্তান-পাকিস্তান নীতি ঘোষণার পরে সন্ত্রাস প্রশ্নে ইসলামাবাদের কড়া সমালোচনা করেছিলেন ট্রাম্প। আফগানিস্তানে ভারতকে পাশেও চেয়েছিলেন তিনি। ফলে সন্ত্রাস প্রশ্নে সাময়িক ভাবে স্বস্তি পেয়েছিল ভারত। কিন্তু গতকাল ট্রাম্পের টুইটে রক্তচাপ বেড়েছে দিল্লির। বিদেশনীতির ব্যর্থতা নিয়ে তাই সরকারকে খোঁচা দিয়েছেন বিরোধীরা। অন্য নানা বিশ্বনেতার মতো ট্রাম্পকেও আলিঙ্গন করেছিলেন মোদী। টুইটারে রাহুল গাঁধীর কটাক্ষ, ‘‘মোদীজি, মনে হয় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আর একটা আলিঙ্গন চাইছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement