স্মৃতি: পরিবারের সঙ্গে নিহত ক্যাপ্টেন কপিল কুণ্ডু। ফাইল চিত্র
নিয়ন্ত্রণরেখায় ফের পাক গোলা। ফের মৃত্যু ভারতীয় সেনাদের। এ বার জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরি। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন সেনার এক ক্যাপ্টেন ও তিন জওয়ান।
সেনাবাহিনী জানাচ্ছে, আজ বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ রাজৌরির ভীমবেড় গলি সেক্টরে বিনা প্ররোচনায় গুলিগোলা ছুটে আসে পাকিস্তানের দিক থেকে। জবাব দেয় ভারতীয় সেনাও। এই গুলি-বিনিময়ে ভারতীয় সেনার দুই রাইফেলম্যান রাম অবতার ও শুভম সিংহ এবং হাবিলদার রোশন লাল প্রাণ হারান। গুরুতর আহত হন ক্যাপ্টেন কপিল কুণ্ডু। পরে তিনি মারা যান। আহত হয়েছেন ইকবাল আহমেদ নামে এক ল্যান্স নায়েক। ১৫ জম্মু-কাশ্মীর লাইট ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের ক্যাপ্টেন কপিল কুণ্ডুর বাড়ি গুরুগ্রামে। নিহত তিন জন জওয়ানের মধ্যে রাম অবতারের বাড়ি গ্বালিয়রে। শুভম জম্মু-কাশ্মীরের কাঠুয়া এবং রোশন সাম্বার বাসিন্দা ছিলেন।
আজ সকাল থেকেই পুঞ্চ জেলার শাহপুর সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখার ও-পার থেকে গুলিগোলা চলছিল। পুলিশ জানাচ্ছে, তাতে দুই স্থানীয় কিশোরী শাহজাদ বানো (১৫) এবং ইয়াসিন আরিফ (১৪) আহত হয়। জখম হন ভারতীয় সেনার এক জওয়ানও। বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ রাজৌরিতেও হামলা শুরু করে পাক সেনা। বিবৃতিতে ভারতীয় সেনাবাহিনী বলেছে, ছোট-বড় স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র থেকে শুরু করে মর্টার এমনকী বহনযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রও ছোড়ে পাকিস্তান। ভারতীয় সেনার পাল্টা গুলিতে পাক সেনার ছাউনি যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আবার পাক সেনার পাল্টা দাবি, সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে ভারত। তাতে প্রাণ গিয়েছে ১৬ বছরের এক পাক কিশোরের।
রাজৌরির ডিসি শাহিদ চৌধুরি জানিয়েছেন, ক্রমাগত সংঘর্ষবিরতি ভাঙছে পাক সেনা। এ দিন ঘটনার পরে নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে পাঁচ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকার সমস্ত স্কুল আগামী তিন দিন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘দেশবাসীর প্রশ্ন, ৫৬ ইঞ্চির ছাতিওয়ালা প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানের এমন স্পর্ধার জবাব কবে দেবেন?’’
ফেসবুকে ‘কে কে’ নামে প্রোফাইল রয়েছে ক্যাপ্টেন কপিল কুণ্ডুর। নামের নীচে স্টেটাসে রাজেশ খন্নার ‘আনন্দ’ ছবির বিখ্যাত সংলাপের ইংরেজি তর্জমা— ‘জীবনটা হওয়া দরকার বড়। লম্বা নয়।’
আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি ২৩ বছরে পা দিতেন কপিল।