হামলার বলি: নিহত পাঁচ জনই এক পরিবারের। —নিজস্ব চিত্র।
পাকিস্তানি হামলায় ফের তপ্ত হল নিয়ন্ত্রণরেখা। আজ জম্মুর পুঞ্চে মেন্ধর এলাকায় পাক হানায় একই পরিবারের পাঁচ জন নিহত হয়েছেন। হামলার জবাব দিচ্ছে ভারতীয় সেনাও।
সেনা জানিয়েছে, আজ সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ মেন্ধরের বালাকোট সেক্টরে মর্টার হামলা শুরু করে পাক সেনা। বালাকোটের দেবতায় একটি বাড়ির উপরে মর্টারের শেল এসে পড়ে। তাতে মহম্মদ রমজান, তাঁর স্ত্রী মালিকা বি ও তিন ছেলে মহম্মদ রহমান, মহম্মদ রিজওয়ান ও মহম্মদ রেজ্জাক নিহত হন। গুরুতর জখম হয় রমজানের দুই মেয়ে বছর চোদ্দোর নোরেন আখতার ও বছর সাতেকের মারিন আখতার। তাদের প্রথমে রাজৌরির জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পাঠানো হয় জম্মুর সরকারি মেডিক্যাল কলেজে। দুপুর বারোটা নাগাদ পাক হামলা থামলে ওই এলাকায়
গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন সেনা ও রাজ্য প্রশাসনের উচ্চপদস্থ অফিসারেরা। আহত হন এক জুনিয়র কমিশনড অফিসার-সহ পাঁচ সেনাও।
সেনা জানিয়েছে, ভাওয়ানি, করালি, সাইদ, নাম্ব ও শের মকরি এলাকাতেও হামলা চালাচ্ছে পাকিস্তান। সেনা মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল দেবেন্দ্র আনন্দের কথায়, ‘‘নিয়ন্ত্রণরেখার ৪-৫ কিলোমিটার দূরের জনবসতি লক্ষ করেও হামলা চালাচ্ছে পাকিস্তানে। সেখানে ভারতীয় সেনার কোনও জওয়ান, ঘাঁটি বা উপকরণ মোতায়েন নেই। বোঝাই যাচ্ছে পাক সেনা স্থানীয় বাসিন্দাদের উপরেই হামলা চালাতে চাইছে।’’ সেই সঙ্গে গ্রীষ্মের মুখে পাকিস্তান বড় ধরনের অনুপ্রবেশ ঘটাতে চাইছে বলেও মনে করছেন গোয়েন্দারা। উমর হাফিজ নামে এক পাকিস্তানি জঙ্গি উপত্যকায় জইশ ই মহম্মদের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চলছে। তবে এই বিষয়টি নিয়ে এখনও নিশ্চিত নন গোয়েন্দারা। সেনা কর্তাদের মতে, পুঞ্চে কিছুটা সুবিধেজনক অবস্থানে রয়েছে পাক সেনা। কারণ, ওই এলাকায় পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের ভূমি কিছুটা উঁচু। ফলে পাক সেনার পক্ষে নজরদারি ও হামলা চালানো সহজ।
আরও পড়ুন: বিরোধী ঐক্য ভাঙতে পাল্টা তৎপর মোদী, অমিত
২০১৭ সালে পাক হামলায় ২৮ জন ভারতীয় সেনা নিহত হন। আহত হন ৭০ জন ভারতীয় জওয়ান। পাল্টা হামলায় ১৩৮ জন পাক সেনা নিহত হন।
এক জখমকে নিয়ে হাসপাতালের পথে। রবিবার জম্মুর পুঞ্চে। ছবি: পিটিআই।
ভিডিও সৌজন্য টুইটার।
সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, ক্রমাগত গোলাবর্ষণের ফলে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষও ক্ষুব্ধ। গত কাল এ নিয়ে নিয়ন্ত্রণরেখা পর্যন্ত মিছিলও করার চেষ্টা করে জেকেএলএফের পাক-অধিকৃত কাশ্মীর শাখা। পুলিশ বাধা দেওয়ায় সংঘর্ষ বাধে। একটি চেকপোস্টে আগুন লাগিয়ে দেয় জনতা। পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে জেকেএলএফের নেতা তৌকির গিলানি দাবি করেন, ‘‘মুজফ্ফরাবাদের সরকারকে স্থানীয় বাসিন্দাদের অবস্থা বোঝাতেই মিছিল বের করেছিলাম আমরা।’’
আরও পড়ুন: বিদেশি মুদ্রায় আয় কমেছে, জানাল কেন্দ্র
গত সপ্তাহেই প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীমারামন পাক সেনার সংঘর্ষবিরতি প্রসঙ্গে জানিয়েছিলেন ভারতীয় সেনা এর যোগ্য জবাব দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর যে কোনও ধরনের হামলা ঠেকাতে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হচ্ছে।