সাবরমতী আশ্রম। ছবি সংগৃহীত।
অতিমারিতে অক্সিজেন আর টিকার চূড়ান্ত আকালেও নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্নের সেন্ট্রাল ভিস্টার জন্য রাজকোষে টাকার আকাল হয়নি। যার ফলে গঙ্গায় ভেসে গিয়েছে মানুষের মৃতদেহ, রাজ্যে রাজ্যে জ্বলেছে চিতা।
মোগল আগ্রাসন সহ্য করেও শতাধিক বছর ধরে টিকে থাকা মন্দির গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মোদীর লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীতে, প্রধানমন্ত্রীর সাধের প্রকল্পের জন্য।
এ বারে ফের। নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্নের দাম দিতে গিয়ে গাঁধীজির সাবরমতী আশ্রম চত্বর ঘিরে থাকা দু’শোরও বেশি দলিত পরিবারকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। গাঁধীর সাবরমতী আশ্রমকে মোদীর উদ্যোগে ‘বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র’ হিসেবে গড়ে তোলার জন্যই ওই আশ্রমের জমিতে বসবাসকারী হরিজনদের উচ্ছেদের প্রকল্প নিয়েছে কেন্দ্র। ১৯১৭ সালে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর তৈরি ওই আশ্রমে পাঁচ প্রজন্ম ধরে বসবাসকারী হরিজন পরিবারগুলিকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার জন্য গুজরাত সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর ‘স্বপ্নের প্রকল্প’ গড়ে তোলার জন্য উন্নয়ন করা হবে ওই চত্বরের। এ নিয়ে শাহের সঙ্গে এক বৈঠকের পরে আশ্রম সফরে যান গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণীর মুখ্যসচিব কে কৈলাসনাথ। রাজ্যের প্রস্তাব, ওই আশ্রমবাসীদের জন্য বিকল্প বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। তাঁরা তাতে রাজি না হলে ৬০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
সাবরমতী আশ্রমের বিস্তৃত অংশে রয়েছে ৫টি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দফতরও। গাঁধীর অনুপ্রেরণায় নানা গঠনমূলক কর্মসূচি চালায় এই সংস্থাগুলি। এই পাঁচটি সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত একটি উপদেষ্টা কমিটির মাথায় রয়েছেন বিজয় রূপাণী। যদিও সূত্রের খবর, মোদীর ‘স্বপ্নের প্রকল্পের’ জন্য আশ্রমের দলিত পরিবারগুলিকে উচ্ছেদের পরিকল্পনার কথা সরকার ওই প্রতিনিধিদের জানায়নি।
আশ্রমের বাসিন্দাদের ইতিমধ্যেই চুক্তিপত্রে সই করার প্রস্তাব দিয়েছে আমদাবাদ পুরসভা। যাঁরা সই করেছেন, তাঁদের ২০ লক্ষ টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়েছে। আশ্বাস, বাড়ি ছাড়ার পরে দেওয়া হবে বাকি ৪০ লক্ষ টাকা।