রামমন্দির নিয়ে কোর্টের রায়ের আগে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না, জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: এএনআইয়ের টুইট থেকে।
কোনও প্রতিপক্ষকে পাত্তাই না দেওয়ার যে ভাবটা দেখা যাচ্ছিল গত সাড়ে চার বছর ধরে, তা উধাও। ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাওয়া যে ভাবমূর্তিটা তৈরি হয়েছিল ধীরে ধীরে, তা আচমকাই যেন অতীত। সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনে নিজেদের গড় হিসেবে পরিচিত হিন্দি বলয়ে উল্লেখযোগ্য ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। সম্ভবত সেই ধাক্কাই প্রথম বারের জন্য এমন পূর্ণাঙ্গ সাক্ষাৎকারে হাজির করল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। কিন্তু মঙ্গলবার এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যে রকম খোলামেলা মেজাজে দেখা গেল নরেন্দ্র মোদীকে, যে ভাবে সব প্রশ্নের মুখোমুখি হলেন নির্দ্বিধায়, যে ভাবে সংসদীয় সৌজন্যের বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করলেন, সেই রূপে আগে কখনও দেখা যায়নি প্রধানমন্ত্রী মোদীকে।
রাম মন্দির ইস্যুতে এই প্রথম নীরবতা ভাঙলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রামমন্দির নিয়ে সমস্ত জল্পনা উড়িয়ে স্পষ্ট ভাবে তিনি জানিয়ে দিলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আগে মন্দির নির্মাণ নিয়ে অধ্যাদেশ জারি করা হবে না। রামমন্দির সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তির পরেই এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্র।
এই মুহূর্তে রামমন্দির সংক্রান্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। কবে থেকে মামলার শুনানি শুরু হবে তা জানুয়ারিতে জানানো হবে। এ দিনের সাক্ষাৎকারে মোদী বলেন, ‘‘মামলা আগে নিষ্পত্তি হোক। তারপর কেন্দ্রীয় সরকারের যা কর্তব্য তাই করা হবে। মন্দির নির্মাণের বিষয়টা সংবিধান মেনেই হবে।’’পাশাপাশি রামমন্দিরের শুনানিতে দেরি হওয়ার জন্য কংগ্রেসকে বিঁধেছেন তিনি। তাঁর কথায়,‘‘কোর্টে কংগ্রেসের আইনজীবীরা বাধার সৃষ্টি করছেন। তাঁদের এগুলো বন্ধ করা উচিত। বিচারব্যবস্থাকে তার মতোই চলতে দিন।’’
আরও পড়ুন: দেশভক্তির প্রমাণ চাই স্কুলেও, হাজিরা দিতে ইয়েস স্যর নয়, বলতে হবে ‘জয় হিন্দ’
রামমন্দির নির্মাণ নিয়ে ক্রমাগত চাপ দিয়ে চলেছে সঙ্ঘ পরিবার। ক্রমাগত চাপ আসছে সাধু-সন্ত সমাজ থেকেও। তাদের দাবি, দ্রুত মন্দির নির্মাণ নিয়ে অধ্যাদেশ এনে চূড়ান্ত পদক্ষেপ করুক কেন্দ্র। কিন্তু রামমন্দির সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন হওয়ায় বিজেপি এ নিয়ে তাড়াহুড়ো করতে চাইছিল না। ফলে দু’দিক বজায় রেখে সম্প্রতি দলের সভাপতি অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, বিজেপি রামজন্মভূমিতেই মন্দির গড়ার পক্ষপাতী, কিন্তু তা কোনওভাবেই সংবিধানের বিপরীতে হেঁটে নয়। অমিত শাহ মুখ খুললেও এতদিন রামমন্দির নিয়ে চুপ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রথম তিনি রামমন্দির নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টিকোণ স্পষ্ট করলেন।
আরও পড়ুন: মধুচন্দ্রিমার পর্ব কি শেষ! মায়াবতীর শর্ত মেনেই ‘জোটরক্ষা’ কংগ্রেসের