শিশু ধর্ষণে ফাঁসি দিতে অর্ডিন্যান্স আনছে কেন্দ্র

বর্তমানে চালু ‘শিশু যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ আইন, ২০১২’ (পকসো) অনুযায়ী, ১২ বছরের কম বয়সি শিশুদের উপর যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও কমপক্ষে সাত বছরের সাজার বিধান রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৩৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

১২ বছরের কম বয়সি শিশুদের ধর্ষণ করা হলে অপরাধীদের ফাঁসির ব্যবস্থা করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। সূত্রের খবর, শনিবারই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এ ব্যাপারে অর্ডিন্যান্স নিয়ে আসতে পারে।

Advertisement

বর্তমানে চালু ‘শিশু যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ আইন, ২০১২’ (পকসো) অনুযায়ী, ১২ বছরের কম বয়সি শিশুদের উপর যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও কমপক্ষে সাত বছরের সাজার বিধান রয়েছে। তবে অপরাধীদের কড়া সাজা দিতে এই আইনটির সংশোধনের প্রক্রিয়া যে শুরু হয়ে গিয়েছে, সে কথা আজই সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। দিল্লির একটি আট বছরের শিশুকে ধর্ষণের মামলা নিয়ে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চে শুনানির সময়ে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল পি এস নরসিমা জানান, কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক ‘পকসো’ আইনটিতে সংশোধন করে মৃত্যুদণ্ডের বিধান যোগ করতে চলেছে। সেই প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। এ নিয়ে একটি চিঠিও কোর্টে পেশ করা হয়।

আরও পড়ুন: নির্ভয়ার আর্তনাদেও ঘুম ভাঙেনি! ধর্ষণ বেড়েই চলেছে দেশে

Advertisement

গত ২৮ জানুয়ারি দিল্লির আট বছরের একটি শিশুকে ২৮ বছর বয়সি তারই এক তুতো ভাই ধর্ষণ করেছিল। শিশুটিকে পরে অস্ত্রোপচার করাতে হয়। এ নিয়ে শীর্ষ আদালতে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন আইনজীবী অলখ অলোক শ্রীবাস্তব। এই ধরনের ঘটনায় ফাঁসির সাজার আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি। এই মামলাতেই ‘পকসো’ আইনে বদল আনার কথা জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে আগামী ২৭ এপ্রিল মামলার শুনানি। তবে কেন্দ্র আজ কড়া অবস্থানের কথা জানালেও ১২ বছরের কম বয়সিদের উপর যৌন নির্যাতন হলে ফাঁসির সাজা চেয়ে ইতিমধ্যেই বিল পাশ করিয়েছে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানার মতো রাজ্যগুলি।

কাঠুয়া ও সুরাত-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নাবালিকাদের গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনাগুলি দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। কাঠুয়া কাণ্ডের পরে ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু বিকাশ মন্ত্রী মেনকা গাঁধী বলেছিলেন, ১২ বছরের কম বয়সি শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন হলে ফাঁসির শাস্তি চাইছে তাঁর মন্ত্রক। সে সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীরা এ নিয়ে সবর হন। তাঁর মন্ত্রকও সুপ্রিম কোর্টে সরকারের অবস্থান জানাতে চিঠি লেখে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলকে। একই দাবি নিয়ে দিল্লি মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতী মালিওয়ালও টানা অনশন শুরু করেছিলেন। তাঁর যুক্তি, নরেন্দ্র মোদী যদি এক রাতে নোট বাতিলের মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তা হলে ‘পকসো’ আইনে মৃত্যুদণ্ডের ব্যবস্থা রাখতে এত সময় লাগবে কেন? কেন্দ্রের তরফে ‘পকসো’ আইন সংশোধনের প্রস্তাব আসার পরে মালিওয়াল আজ অনশন ভেঙেছেন। তিনি ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।

নির্ভয়া কাণ্ডের পরে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ধর্ষণে ফাঁসির সাজার ব্যবস্থা করতে অর্ডিন্যান্স আনা হয়েছিল। এ বার ‘পকসো’ পাল্টানোর পালা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement