নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকের পর কাল থেকেই সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার তোড়জোড় শুরু করেছে জগন্মোহনের দল। আর আজ এনডিএ ছাড়ার পর পৃথক অনাস্থা প্রস্তাব আনল চন্দ্রবাবু নায়ডুর দল। কংগ্রেস ও বামেরা তড়িঘড়ি এই অনাস্থা সমর্থন করে দেয়। কিন্তু দিন গড়াতে বিরোধীদের মনেই শঙ্কা, এ’টি নরেন্দ্র মোদীরই পাতা ফাঁদ নয় তো?
আপাত ভাবে মোদীর বিরুদ্ধে প্রথম অনাস্থা সরকারের পক্ষে অস্বস্তিরই। কিন্তু স্পিকার সুমিত্রা মহাজন আজ সেই প্রস্তাব খারিজ করেননি। বলেছেন, হট্টগোল হলে পাশ হবে না। কংগ্রেসের প্রশ্ন, হট্টগোলে অর্থবিল পাশ হতে পারে, অনাস্থা কেন নয়?
যে অনাস্থা প্রস্তাব পাশ হলে সরকারের পতন অনিবার্য, সরকার জিতলেও জিতবে কষ্ট করে, তা নিয়ে সরকারের এত আত্মবিশ্বাস কেন? বিরোধীদের অনেকে বলছেন, আসলে চন্দ্রবাবু জোট ছাড়ার পরেও মোদীর পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। বিহার-উত্তরপ্রদেশে উপনির্বাচনে হার, শরিক বিচ্ছেদ, এ সবের মধ্যে অনাস্থা প্রস্তাবের লোপ্পা বলে জয়ের ছক্কা মারতে চাইছেন মোদী।
মোদীর এই চাল বুঝেই সম্ভবত তৃণমূল এখনও সিদ্ধান্ত পাকা করেনি। শিবসেনাও ভোটদানে বিরত থাকার কথা ভাবছে। এই পরিস্থিতিতে সোমবার ফের যদি অনাস্থা প্রস্তাব আনার চেষ্টা হয়, বিরোধী শিবিরের হট্টগোলেই তা ভেস্তে যাবে। আবার বিজেপিরই একাংশ মনে করছে, জিতলেও তা সুখের হবে না। ফলে কোনও বন্ধু দলকে দিয়ে হট্টগোল করিয়ে অনাস্থা ভেস্তে দেওয়াটাই ভাল। আবার, বিজেপির একাংশ বিষয়টি নিয়ে আশঙ্কায় নেই, তা নয়। অনাস্থায় ভাল ভাবে জিততে গেলে শরিকদের ভোট পেতেই হবে। কিন্তু তাদের অবস্থান খুবই টলোমলো। সুতরাং লোপ্পা বলে ছয় মারতে গিয়ে ফস্কে আউট হওয়ার সম্ভাবনাও একটা থেকে যায়।
লোকসভায় বিজেপি ২৮২টি আসন জিতে এসেছিল। এখন স্পিকারকে নিয়ে সে’টি এসে দাঁড়িয়েছে ২৭৩-এ। বিজেপি অবশ্য আরও দুই মনোনীত সাংসদকে যোগ করে সংখ্যাটি ২৭৫ দেখাচ্ছে। কংগ্রেস বলছে, বিজেপির আসল সংখ্যা ২৭৩। কারণ কীর্তি আজাদ সাসপেন্ডেড। আর শত্রুঘ্ন সিন্হা বিজেপিতে থেকেও নেই। উপনির্বাচনগুলিতে বিজেপি নিজেদের ১০টির মধ্যে ৬টি আসন খুইয়েছে। পাঁচটি আসন ফাঁকা রয়েছে।