অমিত শাহ এবং নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
বিরোধীদের তোলা ইস্তফার দাবি ইতিমধ্যেই উড়িয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু বি আর অম্বেডকরকে নিয়ে তাঁর করা মন্তব্যের অভিঘাতে শনিবারও প্রতিবাদ অব্যাহত রইল রাজ্য জুড়ে। বিজেপি অবশ্য এ দিনও অম্বেডকর প্রসঙ্গে বিরোধীদের অবস্থানকেই আক্রমণ করেছে!
অম্বেডকর সংক্রান্ত মন্তব্যের জন্য শাহের ক্ষমাপ্রার্থনা এবং কেন্দ্রের কাছে তাঁকে বরখাস্ত করার দাবিতে দেশ জুড়ে ইতিমধ্যেই বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল সিপিএম এবং তাদের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই। সিপিএমের গণ-সংগঠন ছাড়াও বাম প্রভাবিত সামাজিক সংগঠনগুলিও পথে নেমেছিল। ‘পশ্চিমবঙ্গ সামাজিক ন্যায় মঞ্চ’ শিলিগুড়ি-সহ নানা জায়গায় প্রতিবাদ জানিয়েছে। সেই সঙ্গে, কলকাতায় মল্লিক বাজার মোড়ে জমায়েত ও মিছিল করে তারা। দলের জলপাইগুড়ি জেলা সম্মেলন উপলক্ষে প্রকাশ্য সমাবেশে যোগ দিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম অভিযোগ করেছেন, আরএসএস প্রথম থেকেই সংবিধান যে মানতে চায় না, সেটাই অম্বেডকর সংক্রান্ত মন্তব্য-সহ বিভিন্ন বিষয়ে বিজেপি নেতৃত্বের মনোভাবে প্রকাশিত হচ্ছে। একই সুরে সরব হয়েছেন ত্রিপুরার সিপিএম রাজ্য সম্পাদক তথা সেখানকার বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরীও। আগরতলায় দলের একটি কর্মসূচিতে এ দিন তিনি বলেন, “ভারতের সংবিধান এবং জাতীয় পতাকা গৃহীত হওয়ার সময়ে আরএসএস বিরোধিতা করেছিল। ওই আরএসএসেরই নেতা অমিত শাহ। বিজেপি, আরএসএস শুধু ভোট পেতে অম্বেডকরের মূর্তিতে মালা দেয়।”
একই বিষয়ে প্রতিবাদ জারি রেখেছে কংগ্রেসও। পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এবং স্থানীয় স্তরে দলের তরফে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। সম্প্রতি লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে দলের সাংসদদের উপরে ‘হামলা’র অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। সেই সূত্র ধরে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, “রাহুল গান্ধী-সহ কংগ্রেস সাংসদদের সংসদে ঢুকতে দিচ্ছে না। অম্বেডকরকে নিয়ে শাহের ঘৃণ্য মন্তব্য থেকে নজর ঘোরাতে এখন রাহুলের বিরুদ্ধে নানা কথা বলা হচ্ছে। বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেসের মতাদর্শগত লড়াই চলবে।”
অম্বেডকর-মন্তব্যকে হাতিয়ার করে আগামী কাল, সোমবার রাজ্য জুড়ে তৃণমূল কংগ্রেস যে প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছে, এ দিন তা ফের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, “বিজেপির মুখোশ খুলে গিয়েছে। এঁরা অম্বেডকর, দলিত, সংবিধানকে সম্মান করেন না।”
যদিও বিরোধীদের মন্তব্য ও কর্মসূচিকে আমল দেয়নি বিজেপি। রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পালের বক্তব্য, “জওহরলাল নেহরু অম্বেডকরকে মন্ত্রিসভায় স্থান দেননি। তাঁকে ভারতরত্নও দেয়নি কংগ্রেস সরকার। আর এই কংগ্রেসের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া পাড়ার দল তৃণমূল এখন সর্বভারতীয় হওয়ার স্বপ্নে এই সব বিষয়ে পথে নামছে!”