স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বে বিরোধীদের মিছিল। পিটিআই
সংসদ থেকে সড়কে।
লখিমপুর খেরি কাণ্ডে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির পদত্যাগ এবং শাস্তির দাবিতে এটাই ছিল বিরোধীদের সম্মিলিত স্লোগান।
রাজ্যসভার বারো জন সাংসপেন্ড হওয়া সাংসদের সঙ্গে সংসদ চত্বরের গাঁধী মূর্তি থেকে মিছিল করে বিরোধীদের বিভিন্ন নেতা আজ পৌঁছলেন বিজয় চকে। সেখানে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে মোদী সরকারকে নিশানা করলেন কংগ্রেসের রাহুল গাঁধী, ডিএমকে-র তিরুচি শিবা, তৃণমূল কংগ্রেসের দোলা সেন, এসপি-র বিশ্বম্ভর প্রসাদ নিষাদ, শিবসেনার সঞ্জয় রাউত প্রমুখ নেতা। প্রত্যেকের বক্তব্যের নির্যাস, লখিমপুর খেরিতে কৃষকদের হত্যা পূর্ব-পরিকল্পিত। সিট-এর সাম্প্রতিক রিপোর্টে তা প্রমাণিত। এই ষড়যন্ত্রে যুক্ত রয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী টেনি। তাঁকে গ্রেফতার করা হোক। আন্দোলন চলবে সংসদ থেকে সড়কে।
রাহুল গাঁধীর কথায়, “কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর গাড়ির তলায় কৃষকদের পিষে মারা হয়েছে। সেই গাড়িতে ছিলেন মন্ত্রীর পুত্র। প্রধানমন্ত্রী এক দিকে কৃষকদের কাছে ক্ষমা চাইছেন, অন্য দিকে কৃষকদের উপরে বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার চলছে। আমরা সব বিরোধী দল আজ এই বার্তা দিতে চাই যে, আমরা কৃষকদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ বরদাস্ত করব না। আমরা মন্ত্রী অজয়কুমার মিশ্র টেনিকে জেলে ঢুকিয়েই ছাড়ব।” ডিএমকে নেতা তিরুচি শিবা বলেন, “মোদী সরকার তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নিয়ে ভাবল, খেলা শেষ হয়ে গিয়েছে। ৭০০ জন কৃষক যে শহিদ হলেন, তার কী হবে? কৃষকদের যে দাবিগুলি এখনও মানা হয়নি, তার সুরাহা করবে কে? সিট-এর রিপোর্টের পরে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, লখিমপুর খেরিতে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয়েছিল কৃষকদের। অজয় মিশ্রকে পদত্যাগ করতেই হবে।”
রাহুলের পাশে দাঁড়িয়েই তৃণমূলের দোলা সেন বলেন, “আমরা ওই ঘটনার পরে লখিমপুর খেরি পৌঁছে যাই। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। সিট-এর রিপোর্টে স্পষ্ট যে, বিষয়টি ছিল ষড়যন্ত্র। আমরা শুধু অজয় মিশ্রের পদত্যাগই নয়, তাঁর কারাবাসের দাবি করছি। সংসদের ভিতরে এবং বাইরে আমরা এই নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
শিবসেনার সঞ্জয় রাউত লখিমপুর খেরি নিয়ে আন্দোলন শুরু করার কৃতিত্ব দিয়েছেন রাহুল গাঁধী এবং প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাকে। তাঁর কথায়, “রাহুলজি এবং প্রিয়ঙ্কাজিকে আমরা কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। সেই রাতে যদি ওঁরা না পৌঁছতেন, তা হলে গোটা বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে দেওয়া হত।” তিনি জানান, আগামিকাল সংসদীয় অধিবেশন শেষ হলেও লড়াই শেষ হবে না। গোটা বিশ্ব দেখেছে, কী ভাবে মন্ত্রীপুত্র গাড়ি চাপা দিয়ে কৃষকদের মেরেছেন। মিছিলের পাশাপাশি আজ সংসদের দুই কক্ষেই বিরোধীরা প্ল্যাকার্ড-পোস্টার নিয়ে ওয়েলে নেমে হইচই করেন। গন্ডগোলের জেরে রাজ্যসভা বার বার মুলতুবি হয়ে যায়।