দফায় দফায় মুলতুবি করে দিতে হয় সংসদের দুই কক্ষের অধিবেশন। ছবি— পিটিআই।
এক দিকে রাহুল গান্ধীর ক্ষমা চাওয়ার দাবি, অন্য দিকে যৌথ সংসদীয় কমিটি গড়ে আদানি তদন্তের দাবি— এই দু’য়ের জেরে বৃহস্পতিবারও দফায় দফায় মুলতুবি হয়ে যায় সংসদের উভয় কক্ষের অধিবেশন। বৃহস্পতিবার শেষ পর্যন্ত রাজ্যসভার অধিবেশন দিনের মতো মুলতুবি হয়ে যায়। লোকসভার অধিবেশন আবার বসবে সন্ধ্যা ৬টায়।
সংসদের অধিবেশন যাতে সুষ্ঠু ভাবে চালানো সম্ভব হয় সে জন্য বৃহস্পতিবার অধিবেশন শুরুর আগে সরকারি ও বিরোধী পক্ষের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়। কিন্তু তাতেও কাজের কাজ যে কিছুই হয়নি তা স্পষ্ট হয়ে যায় অধিবেশন শুরুর পরেই। শাসক বিরোধী দাবি-পাল্টা দাবির জেরে অধিবেশন শুরুর ১৮ মিনিটের মধ্যেই সভা মুলতুবি করে দেওয়া হয়।
গত ১৩ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে সংসদের বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্ব। এই পর্ব শেষ হওয়ার কথা আগামী ৬ এপ্রিল। এই পর্বের শুরু থেকেই শাসক বিরোধী দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। শাসক বিজেপির দাবি, লন্ডনে গিয়ে রাহুল গান্ধী ভারতের গণতন্ত্র নিয়ে যে কথা বলছেন তার জন্য তাঁকে সংসদে দাঁড়িয়ে ক্ষমা চাইতে হবে। প্রাথমিক ভাবে ক্ষমা চাওয়ার ক্ষেত্রে আপত্তি তুললেও পরবর্তী কালে রণকৌশল বদলায় কংগ্রেস। গত কয়েক দিন ধরেই অধীর চৌধুরীর মতো কংগ্রেসের সাংসদরা দাবি করছেন, রাহুলকে সংসদে নিজের বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়ার। কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি আসলে মূল সমস্যা থেকে নজর ঘোরাতে রাহুলের মন্তব্যকে তিল থেকে তাল বানানোর চেষ্টা করছে। অন্য দিকে, বিরোধীদের দাবি আদানিকাণ্ড নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটি গড়ে তদন্তের। সেই দাবি নিয়েও এখনও পর্যন্ত কোনও উচ্চবাচ্য করেনি মোদী সরকার। বিরোধীদের দাবি, আদানি নিয়ে অস্বস্তিকর প্রশ্ন এড়াতেই রাহুলকে নিয়ে গোলমাল চাইছে বিজেপি। ঘটনাচক্রে, আদানি নিয়ে বিরোধীরা সংসদে আলোচনার দাবি জানালেও তা মেনে নেওয়ার কোনও ইঙ্গিত এখনও পর্যন্ত মেলেনি। সংসদের অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যাওয়ার পর বিরোধী সাংসদরা বাইরে এসে বিক্ষোভ দেখান। তবে তাতে ছিল না তৃণমূল।
বিজেপি ও কংগ্রেসের থেকে সমদূরত্ব তৈরি করা তৃণমূল বৃহস্পতিবার স্মারকলিপি জমা দেয় ইডি দফতরে। তৃণমূল সাংসদদের অন্য একটি দল যায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কাছে। তৃণমূল সাংসদদের দু’টি দলেরই দাবি, আদানিকাণ্ড নিয়ে তদন্ত এবং গ্রেফতারির।