ডি পি কোহলি স্মারক বক্তৃতার অনুষ্ঠানে অরুণ জেটলি। সোমবার নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে । ছবি: পিটিআই।
বিদেশ থেকে কালো টাকা ফেরাতে এত দিন সরকারকে চেপে ধরেছিল বিরোধীরা। আর এখন সেই বিরোধীদেরই কেউ কেউ সরকারের শরণে। কেন? তাঁরা চান, বিদেশে রাখা কালো টাকার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে সরকার যে বিল আনতে চলেছে, তা পিছোনো হোক। না হলে অন্তত লঘু করা হোক বিলের কিছু ধারা।
ঘনিষ্ঠ মহলে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি আজ বলেন, ‘‘বিরোধী দলের অনেক সাংসদ নানা অজুহাতে এই বিলটি পিছোতে চাইছেন। লিখিত ভাবেও আমার কাছে কয়েক জন সেই আর্জি জানিয়েছেন।’’ কোন দলের সাংসদরা চিঠি লিখেছেন, খোলসা করতে চাননি তিনি। তবে বিরোধী দলের এক সাংসদ আজ কবুল করেন, ‘‘এই বিল আনলে অনেক শিল্পপতি, এমনকী অনেক সাংসদও বিপাকে পড়বেন।’’ সমাজবাদী পার্টির সাংসদ নরেশ অগ্রবাল আজ বলেন, ‘‘এই বিলে এমন অনেক ধারা রয়েছে, যেগুলো প্রয়োগ করে সাধারণ মানুষ থেকে শপরু করে আয়কর দফতরের অফিসারদেরও হেনস্থা করা যাবে।’’
এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দাবি, ‘‘এ সব অজুহাত মাত্র। কালো টাকা রোখার বিলের বিরোধিতা যাঁরা করছেন, তাঁরা প্রকারান্তরে স্বীকার করছেন যে তাঁরা ভয় পেয়েছেন। সংসদে বিরোধিতা করলে মুখোশ খুলে যাবে। কালো টাকা ধরা পড়লে করের উপরে বিপুল জরিমানা ও দশ বছর পর্যন্ত কারাবাস হতে পারে। তাই তাঁরা গোপনে আসছেন আর্জি নিয়ে।’’
সরকার কিন্তু বিলটি নিয়ে পিছোতে চাইছে না। বিজেপি সূত্রের মতে, বিরোধী নেতারা একে অনুরোধ জানানোর পরে জেটলি বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, কোনও ভাবেই লঘু করা হবে না বিলটি। পিছোনোরও প্রশ্ন নেই।
সংসদীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু বলেন, ‘‘ভোটের আগেই বিদেশের ব্যাঙ্কে গচ্ছিত কালো টাকা দেশে ফেরত আনার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকেই উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে প্রধানমন্ত্রী কালো টাকা রোখার ব্যাপারে তাঁর মনোভাব স্পষ্ট করে দেন। বিদেশি ব্যাঙ্ক থেকে টাকা উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন দেশের উপরে নির্ভর করতে হয়। তাতে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। কিন্তু সরকার কড়া আইন এনে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। সেখান থেকে কোনও ভাবে পিছপা হবে না সরকার।’’ তাই বিরোধী নেতাদের অনুরোধ উপেক্ষা করেই সংসদের এই অধিবেশনে আনডিজক্লোজড ফরেন ইনকাম অ্যান্ড অ্যাসেট্স (ইম্পোজিশন অব ট্যাক্স) বিলটি লোকসভা ও তার পরে রাজ্যসভায় পাশ করাতে চাইছে সরকার।