রাষ্ট্রপতি ভবনের বাইরে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের নেতারা। ছবি: পিটিআই।
অশান্ত মণিপুরের পরিস্থিতি স্বচক্ষে দেখার জন্য সে রাজ্যে যাওয়া উচিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। বুধবার দুপুরে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করে এই দাবি জানাল বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র ৩১ জন প্রতিনিধি। মণিপুরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি জানিয়ে রাষ্ট্রপতির হাতে একটি স্মারকলিপিও তুলে দেন বিরোধী সাংসদেরা।
প্রতিনিধিদলে ছিলেন ‘ইন্ডিয়া’ জোটের প্রায় সব শরিক দলের শীর্ষ স্থানীয় নেতারা। যে ২১ জন বিরোধী সাংসদ সম্প্রতি মণিপুরে গিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি স্বচক্ষে দেখে এসেছেন, তাঁরাও ছিলেন এই প্রতিনিধিদলে। তাঁরা তাঁদের চোখে দেখা অভিজ্ঞতা রাষ্ট্রপতির সামনে মেলে ধরেন। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেব মণিপুর থেকে দু’জন মহিলাকে রাজ্যসভায় মনোনয়ন দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করেন। তিনি রাষ্ট্রপতিকে জানান, মণিপুরে নারীদের উপর যে ধরনের অত্যাচারের ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে, তাতে দুই সম্প্রদায়ের দুই মহিলাকে রাজ্যসভায় আনা উচিত।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে বলেন, “আমরা রাষ্ট্রপতিকে মণিপুরের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েছি। সে রাজ্যে মেয়েদের উপর কী ভাবে অত্যাচার চলছে, তা-ও জানিয়েছি। তবে আমাদের মূল দাবি হল, সে রাজ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই মণিপুরে যান। এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করুন রাষ্ট্রপতি।” বুধবারের প্রতিনিধিদলে ছিলেন এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার, তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডেরেক ও’ব্রায়েন, এনসি-র ফারুক আবদুল্লা প্রমুখ।
বুধবার সকালে সংসদে বিরোধী পক্ষের পরবর্তী কৌশল ঠিক করতে খড়্গের দফতরে বৈঠকে বসেন বিরোধী সাংসদেরা। অন্য দিকে সরকারের পরবর্তী কৌশল ঠিক করতে শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। মণিপুর নিয়ে বিরোধী দলগুলির সম্মিলিত আক্রমণ এবং সমালোচনার পাশাপাশি সোমবার থেকে সে রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে ধারাবাহিক সমালোচনার মুখে পড়েছে কেন্দ্র। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেপি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ সোমবার সরকার পক্ষের আইনজীবীর বাংলায় হিংসার অভিযোগ সংক্রান্ত মন্তব্য খারিজ করে বলেছিল, ‘‘অন্য রাজ্যের ঘটনার সঙ্গে মণিপুরের পরিস্থিতি এক করে দেখা যায় না।’’ মঙ্গলবার শীর্ষ আদালত বলেছে, গত তিন মাসের গোষ্ঠীহিংসার ঘটনাগুলি নিয়ে মণিপুর পুলিশের তদন্ত প্রক্রিয়া ‘গয়ংগচ্ছ’ এবং ‘অলসতায় ভরা’।