প্রায় সব বুথ-ফেরত সমীক্ষাই উত্তরপ্রদেশে এগিয়ে রেখেছে বিজেপি-কে। কিন্তু তাদের বেশির ভাগই আবার এ-ও বলেছে যে ৪০৩ আসনের রাজ্যে সরকার গড়ার জাদু-অঙ্ক অধরাই থাকবে নরেন্দ্র মোদীর দলের।
ভোট গণনার আগের দিন ঘরোয়া আলোচনায় এমন সম্ভাবনা ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। বলেছেন, ‘‘কম করে ২৬৫টি আসন আসবে আমাদের ঝুলিতে। এমনকী ৩২৫টিও হয়ে যেতে পারে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর নাম স্থির করতে আগামিকাল দিল্লিতে বৈঠক পর্যন্ত ডেকে ফেলেছেন তিনি।
হাল ছাড়ছে না কংগ্রেসও। বিহারে যে বুথ-ফেরত সমীক্ষা মেলেনি সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে আজ রাহুল গাঁধী বলেন, ‘‘বুথ-ফেরত সমীক্ষা ভুল। কংগ্রেস-সপা জোটই জিতছে। ১১ তারিখ কথা হবে।’’
সপা-কংগ্রেস জোট অথবা বিজেপি— কোনও একটি পক্ষ যদি ২০২টি আসন পেয়ে যায়, তা হলে আর জটিলতা থাকবে না। কিন্তু তা না হয়ে যদি ত্রিশঙ্কু হয় উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা! রাজধানীর রাজনীতিকেরা বলছেন, সে ক্ষেত্রে তুরুপের তাস থাকবে মায়াবতীর হাতে— যাঁকে সরকার গড়ার ধারেকাছে রাখেনি কোনও সমীক্ষাই। ত্রিশঙ্কুর সম্ভাবনা ধর্তব্যের মধ্যে রেখে ভোট পর্ব চলাকালীনই বহেনজিকে বার্তা দিয়ে রেখেছে বিজেপি। গত কাল বার্তা দিয়েছেন অখিলেশ যাদবও। মায়া কিন্তু এখনও ঝেড়ে কাশেননি।
বস্তুত ত্রিশঙ্কু পরিস্থিতিতে মায়ার কী দাবিদাওয়া হতে পারে তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছে দু’পক্ষই। তিনি নিজে মুখ্যমন্ত্রী হতে চাইতে পারেন। আসন সংখ্যা যদি তেমন দাবির অনুকূল না হয়, তা হলে কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, জাতপাতের অঙ্ক মেনে তাই নিয়ে দরকষাকষি করতে পারেন।
আরও পড়ুন: উত্তরাখণ্ডে কি মোদীর কংগ্রেস!
এই বিপদের কথা বিজেপি জানে। তাই দলীয় নেতারা চাইছেন, ত্রিশঙ্কু হলেও তাঁদের সংখ্যাটা যেন দু’শোর যতটা সম্ভব কাছে থাকে। তা হলে আর মায়ার উপরে নির্ভর করতে হবে না। ছোট দল ও নির্দলদের সঙ্গে নিয়েই সরকার গড়ে ফেলা যাবে। আর এক বার সরকার গড়তে পারলে কংগ্রেস, সপা ভাঙানোর পথ তো থাকছেই।
মায়াকে সঙ্গে নিয়ে যে চলা কঠিন, অখিলেশেরও তা অজানা নয়। কিন্তু বিজেপি-কে আটকাতে সেই ঝুঁকি নিতে তিনি রাজি। রাজি কংগ্রেসও। অখিলেশের সুরে তারাও আজ বলেছে, বিজেপি-কে ঠেকাতে সব ধর্মনিরপেক্ষ দলেরই পাশাপাশি আসা উচিত। কারণ, কংগ্রেস বা সপা কেউই ফের ভোট চাইবে না। চাইবে না, রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে দিল্লি থেকে রাজ্য চালাক বিজেপি।
তবে ভোট গণনার আগের দিন ত্রিশঙ্কু নিয়ে যাবতীয় আলোচনা দলের অন্দরেই। বাইরে দু’পক্ষই বুক বাজিয়ে বলছে, সরকার তারাই গড়বে।
ভোট গোনা শুরু সকাল আটটায়। ঘণ্টা চারেকের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে উত্তরপ্রদেশে হোলির রং কী।