এনআরসি এবং সিএএ-র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। ছবি: পিটিআই।
নাগরিকত্ব প্রমাণে ভারতীয় নাগরিককে জন্মস্থান বা জন্মতারিখ সংক্রান্ত প্রামাণ্য নথি অথবা একসঙ্গে দুটো জমা করালেই হবে। তার জন্য ১৯৭১-এর আগেকার পূর্বপুরুষের কোনও পরিচয়পত্র বা জন্মের শংসাপত্র জমা দিতে হবে না। নাগরিকত্ব নিয়ে যাতে কোনও নাগরিককেই অসুবিধায় পড়তে না হয়, তার জন্য এমন ব্যবস্থা বলে জানাল কেন্দ্রীয় সরকার। শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি)-র তরফে একটি টুইটার-বার্তায় এ কথা জানানো হয়েছে।
এ দিন ওই টুইট-বার্তায় আরও জানানো হয়েছে, দেশের কোনও নাগরিককে নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য জন্মস্থান বা জন্মতারিখের নথি ছাড়া অন্য কোনও তথ্যপ্রমাণ দিতে হবে না। ওই একটি বা দু’টি প্রামাণ্য নথিতেই বহু তথ্য থাকে, ফলে অন্য কোনও নথিপত্রের প্রয়োজন নেই। পাশাপাশি, যে সমস্ত নিরক্ষর নাগরিকের কাছে জন্মস্থান বা জন্মতারিখ সংক্রান্ত কোনও নথিই নেই, তাঁদের জন্য ওই সম্প্রদায়ের কোনও সদস্যের সাক্ষ্যও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে পেশ করা যেতে পারে। যদিও তা স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতিসাপেক্ষ বলে জানানো হয়েছে।
দেশ জুড়ে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)-র বিরুদ্ধে যে ধোঁয়াশা এবং বিরুদ্ধমত তৈরি হয়েছে, তা কাটাতেই এই উদ্যোগ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। যদিও সরকারের দাবি, সাধারণ মানুষ যাতে অকারণে বিপত্তি বা অসুবিধায় না পড়েন, সে জন্যই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিএএ বাতিল করুন, মোদীকে ‘আবেদন’ মমতার, অন্য সুর ‘গণভোট’ নিয়েও
আরও পড়ুন: বিক্ষোভে জ্বলছে উত্তরপ্রদেশ, মৃত ৬, গুলি চালায়নি, দাবি পুলিশের
সম্প্রতি অসমে এনআরসি সম্পন্ন হয়েছে। এর পর গোটা দেশেই এনআরসি চালু করতে বদ্ধপরিকর নরেন্দ্র মোদী সরকার। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে একাধিক বার বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তবে তা নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরেই বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে সরকারকে। এমনকি, অসমে এনআরসি-র তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর দেখা যায়, তাতে বাদ গিয়েছে ১৯ লক্ষ মানুষ। যা নিয়ে বিজেপি শাসিত ওই রাজ্যেও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে মোদী সরকারকে। পাশাপাশি, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়েও সরব হয়েছে নানা রাজ্য। এই দু’টি ইস্যু নিয়েই উত্তপ্ত হয়েছে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষাঙ্গন। প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন বিশিষ্টজন থেকে শুরু করে নাগরিক সমাজের একাংশ। পাশাপাশি, প্রতি দিনই দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ-মিছিল হচ্ছে। এনআরসি-র বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ-সহ ৭টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। তাঁদের রাজ্যে এনআরসি প্রয়োগ করা যাবে না বলে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। এই আবহেই পিআইবি-র তরফে টুইট করে জানানো হল, নাগরিকত্ব প্রমাণে কেবলমাত্র একটি বা দু’টি নথিই প্রয়োজন, তার বেশি নয়!