গ্রাফিক্স: শৌভিক দেবনাথ।
ফের ফেল করল ম্যাগি। এ বার পাশ করতে পারল না ‘অ্যাশ কননেন্ট’-এ। ম্যাগির নমুনা পরীক্ষা করে ওই খনিজ পদার্থটি বেশি মাত্রায় পাওয়া গিয়েছে বলে প্রস্তুতকারক সংস্থা নেসলেকে ৪৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ম্যাগির প্রচুর প্যাকেটও। ঘটনাচক্রে এ বারও ম্যাগি ফেল করল উত্তরপ্রদেশের সেই সাহারনপুরেই।
আরও পড়ুন
মোদী কি কাঁদবেন? কোটি টাকার বাজি ধরেছে গুজরাতের সাট্টা বাজার
বুধবার সাহারনপুরের জেলাশাসকের তরফে জানানো হয়েছে, গত বছরের নভেম্বরে ম্যাগির কিছু নমুনা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছে, ওই নমুনাগুলিতে অতিরিক্ত মাত্রায় ‘অ্যাশ কনটেন্ট’ রয়েছে। গবেষকদের দাবি, এই ‘অ্যাশ’ উপাদান খাবারে অতিরিক্ত মাত্রায় থাকলে তা মানবদেহের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক।
আরও পড়ুন
বাবা-কাকা-দাদা মিলে গণধর্ষণ করল যুবতীকে!
সাধারণত কোনও খাবারে কী পরিমাণে ‘অ্যাশ’ উপাদান থাকে?
হায়দরাবাদের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউট্রিশন-এর অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর স্বাতী বসু রায়চৌধুরী বলেন, “বেশির ভাগ তাজা ফলে তার ওজনের ৫ শতাংশ বা একটু কম ‘অ্যাশ’ উপাদান থাকে। অন্য দিকে, তেল ও ফ্যাটজাতীয় খাদ্যে হয় খুব কম, না হলে একেবারেই ‘অ্যাশ’ মেলে না।”
নেসলে কর্তৃপক্ষের দাবি, ম্যাগি পরীক্ষার ওই রিপোর্ট সঠিক নয়। তাঁরা জানিয়েছেন, ওই রিপোর্টের বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন করা হবে। নেসলে ইন্ডিয়ার এক মুখপাত্র বলেন, “ল্যাব টেস্টের রিপোর্ট এখনও আমাদের হাতে আসেনি। আমাদের শুধু জানানো হয়েছে যে, ম্যাগির ওই নমুনাগুলি ২০১৫ সালের এবং নুলডসে ‘অ্যাশ কনটেন্ট’ রয়েছে।” তাঁর আরও দাবি, “পরীক্ষার মানদণ্ডেই গলদ রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। আর সে কারণেই এমন ফল এসেছে হয়তো। প্রশাসনের নির্দেশ হাতে পেলেই আমরা এর বিরুদ্ধে দ্রুত আবেদন করব।” নেসলে-র ৪৫ লাখের পাশাপাশি ওই জেলায় ম্যাগি সরবরাহকারী তিন ব্যক্তিকে ১৫ লক্ষ করে এবং দু’জন বিক্রেতাকে ১১ লক্ষ টাকা করে জরিমানা করেছে জেলা প্রশাসন।
আরও পড়ুন
রাষ্ট্রপতি মাটির মানুষ, আগে চিনতে পারিনি, ভোলবদল মমতার
বছর দুয়েক আগে এই সাহারনপুর থেকেই পাঠানো ম্যাগির নমুনায় অতিরিক্ত সীসা এবং মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট মিলেছিল। তা নিয়ে দেশ জুড়ে নুডলসের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। নেসলেকে ভারতের বাজার থেকে ম্যাগির ৯টি পণ্যই তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেয় ভারতীয় খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ামক সংস্থা ‘ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়া’। দেশ জুড়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় ম্যাগির উৎপাদন। পরে আদালতে দীর্ঘ লড়াই এবং নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ম্যাগির উৎপাদন এবং বিক্রিতে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
সেই সময় থেকেই ম্যাগি-সহ এ ধরনের নুডলসের জন্য গুণমানের একটি মানদণ্ড ঠিক করে নেসলে-সহ অন্য সংস্থাগুলি। খাদ্য নিয়ামক সংস্থার নির্দেশ মাথায় রেখেই ওই পদক্ষেপ করা হয়। নেসলে ইন্ডিয়ার ওই মুখপাত্র এ দিন দাবি করেন, “আমাদের খাদ্যপণ্য ওই মানদণ্ড মেনেই তৈরি করা হয়েছে। এবং আমরা বার বার বলছি, ম্যাগি নুডলস ১০০ শতাংশ নিরাপদ।”
গ্রাফিক্স: শৌভিক দেবনাথ।