এ বারের যোগ দিবসে নরেন্দ্র মোদী যখন ‘পদ্মাসন’ করবেন, সেই সময়ে কৃষকরা করবেন ‘শবাসন’। যোগকেই প্রতিবাদের হাতিয়ার করে এই সমান্তরাল কর্মসূচির ডাক দিয়েছে দেশের ৬২টি কৃষক সংগঠন। রাষ্ট্রীয় কিষাণ মজদুর মহাসঙ্ঘের ছাতার তলায় একজোট হয়ে রবিবার থেকেই দেশ জুড়ে নানা প্রান্তে আন্দোলনে নেমেছে তারা।
কংগ্রেস-বামেদের মতো বিরোধী দলগুলি এখন এই কৃষক আন্দোলনে পরোক্ষ সমর্থন দিতে শুরু করেছে। ১৬ জুন তিন ঘণ্টার জন্য জাতীয় সড়ক বন্ধ করার যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন কৃষকরা, তাতেও ‘নৈতিক’ সমর্থন দেবে কংগ্রেস। রাজঘাটে ‘একতা পরিষদে’র কর্মসূচিতেও সমর্থন দেওয়া হবে। তার আগে ১৪ জুন ধর্নায় বসবে দল। আর ২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে মোদীর মতোই যোগাসনে অংশ নেবেন কৃষকরা। শুধু তাঁরা করবেন ‘শবাসন’। উপরের পোস্টারে লেখা থাকবে, ‘জয় জওয়ান, জয় কিষাণ’। সঙ্গে লালবাহাদুর শাস্ত্রীর ছবি। নীচে ‘জয় বিজ্ঞান’, সঙ্গে বাজপেয়ীর ছবি। তারও নীচে গলায় ফাঁস লাগানো কৃষকের ছবি। সঙ্গে স্লোগান ‘মর গ্যয়া কিষাণ’ আর নরেন্দ্র মোদীর ছবিও।
আরও পড়ুন:রাইসিনার প্রার্থী বাছতে কমিটি গড়লেন অমিত
কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সি পি জোশী আজ অভিযোগ করেন, রেকর্ড ফলন হয়েছে এ বারে। অথচ চাষি দাম পাচ্ছেন না। কারণ ফসল প্রথমে মান্ডিতে বিক্রি হয়, তার পর সেটি মজুতঘর হয়ে খুচরো বাজারে যায়। এই সব কাজই হয় নগদে। নোট বাতিলের ফলে নগদে টান পড়ায় পুরো প্রক্রিয়াটিই ভেস্তে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক শীর্ষ সদস্যের যদিও দাবি, হঠাৎ ফলন বেড়ে যাওয়াতেই দাম কমে গিয়েছে। খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার গত বছর যেখানে ছিল, ৫.৭৬ শতাংশ, এ বছরের মে মাসে সেটা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কমে দাঁড়িয়েছে ২.১৮%। খাদ্যশস্যের দাম পড়েছে ১৯.৪৫%, আনাজের ক্ষেত্রে সেটা ১৩.৪৪ %।
সব মিলিয়ে কৃষক আন্দোলেনর প্রশ্নটি ভালই বেগ দিচ্ছে মোদীকে। তার মোকাবিলায় পঞ্জাব-কর্নাটকের মতো কংগ্রেসশাসিত রাজ্যেও কৃষিঋণ মাফের দাবি তুলতে বলছেন অমিত শাহ। মঙ্গলবার মোদী উৎসবের সূচনা করতে পশ্চিমবঙ্গে যাবেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহ। কৃষক আন্দোলন নিয়ে সেখানে তিনি কিছু বলেন কি না, সেটাই দেখার।