মারা গেলেন বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা ওম পুরি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর। শুক্রবার সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নিজের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন ওমজি। ওম পুরীর দীর্ঘ দিনের বন্ধু পরিচালক অশোক পণ্ডিত সংবাদ মাধ্যমকে এ কথা জানান। পরে টুইটও করেন অশোকবাবু। গতকাল রাতেও সুস্থ শরীরে শুটিং করেছিলেন তিনি।
১৯৫০-এর ১৮ অক্টোবর হরিয়ানার আম্বালায় একটি পঞ্জাবি পরিবারে জন্ম ওম পুরীর। ‘ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা’ থেকে অভিনয়ে প্রথাগত শিক্ষা নিয়েছিলেন তিনি। স্নাতক হন পুণের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইন্সটিটিউট থেকে। ১৯৭৬ সালে মরাঠি ছবি ‘ঘাসিরাম কোতওয়াল’ দিয়ে বড় পর্দায় প্রবেশ। ১৯৮০ সালে ‘আক্রোশ’ ছবির জন্য পান ফিল্মফেয়ারে সেরা সহ-অভিনেতার পুরস্কার। ১৯৮২ এবং ১৯৮৩ সালে ‘আরোহণ’ ও ‘অর্ধ সত্য’-এর জন্য সেরা অভিনেতা হিসাবে পান জাতীয় পুরস্কার। হিন্দির পাশাপাশি মালয়ালম, পঞ্জাবি, কন্নড়, উর্দূ, মরাঠি, তেলুগু ভাষার ছবিতেও অভিনয় করেছেন ওম পুরী। ব্রিটিশ, আমেরিকান ও পাকিস্তানের বেশ কিছু ছবিতেও তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল। কাজ করেছিলেন হলিউডের একাধিক ছবিতেও।
আরও পড়ুন, জন্মদিনটা নিশ্চিত নয়, মৃত্যুদিনটা খোদাই হয়ে রইল ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে
১৯৯৩ সালে বিয়ে করেছিলেন নন্দিতা পুরীকে। যদিও ২০১৩ সালে আলাদা হয়ে যান তাঁরা।
তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে গোটা বলিউড। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই একে একে তাঁর বাসভবনে বলিউডের অনেকেই এসে হাজির হন। দিনভর নিজেকে সামলে রাখলেও শ্যাম বেনেগালকে দেখার পরই স্ত্রী নন্দিতা ভেঙে পড়েন। ছেলে ঈশান ওম পুরীর মৃতদেহের পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন। হুইল চেয়ারে এসে উপস্থিত হন শশী কপূর। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হন অমিতাভ বচ্চন, অভিষেক, সোনু নিগম, শাবানা আজমি, জাভেদ আখতার, বিদ্যা বালন, সুশান্ত সিংহ, মুকেশ তিওয়ারি এবং পঙ্কজ কপূরও।
অনুপম খের আসতে পারেননি। তিনি টুইট করে জানান, ‘‘বিছানায় তাঁর শান্ত, সমাহিত অবস্থায় শুয়ে থাকাটা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। বিশ্বাস হচ্ছিল না যে ইনিই সেই বিখ্যাত অভিনেতা। মারাত্মক শক এটা। ৪৩ বছর ধরে চিনি। আমার কাছে তিনি শুধু একজন বড় মাপের অভিনেতাই নন, তিনি দয়ালু আর খুব বড় মাপের মানুষও বটে।’’
কমল হাসান লেখেন, ‘‘আমি ভাগ্যবান যে তাঁর মতো মানুষের সান্নিধ্য পেয়েছি। কে বলেছে ওম পুরী বেঁচে নেই? তিনি তাঁর কাজের মধ্যেই বেঁচে থাকবেন।’’